এই সময়: রাজ্য প্রশাসনের তরফে সবুজ সঙ্কেত আসার আগেই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই অমিত শাহের সভা হবে বলে ঘোষণা করল বিজেপি। আগামী ২৯ নভেম্বরের এই সভার অনুমতি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গেরুয়া নেতৃত্ব। সেই মামলায় সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা স্পষ্ট বলেন, ‘স্বাধীন রাষ্ট্রে সভাসমিতি করার অধিকার সকলের আছে। সকলের জন্য সমানাধিকার থাকা উচিত।

এক পক্ষের জন্য এক রকম নিয়ম, অন্য পক্ষের জন্য কেন আলাদা নিয়ম?’ আদালতের প্রশ্নের মুখে ধর্মতলায় বিজেপির সভার অনুমতির বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় চায় রাজ্য সরকার। এতে আদালতের নির্দেশ, ‘২৯ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধের কথা জানিয়ে অনুমতি দিক পুলিশ।’ এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কী পদক্ষেপ করা হলো, তা জানিয়ে আগামীকাল, বুধবার আদালতে জানাতে হবে দু’পক্ষকে।

আদালতের নির্দেশের পরেই রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ঘোষণা করেন, ‘বিচারপতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৯ নভেম্বর নির্দিষ্ট সময়েই আমাদের সভা হবে। বিজেপি দেশে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ধর্মতলায় অমিত শাহের সভা হয়েছিল। সেই সভার অনুমতি ২৯ নভেম্বর এসেছিল। দশ বছরের ব্যবধানেও তৃণমূলের চরিত্রের কোনও বদল হয়নি।’

পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই ধর্মতলার মোড়ে সিপিএম সরকারের পুলিশ গুলি চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করেছিল বলে ওখানে শহিদ তর্পণে তৃণমূলের সভা করা হয়। কাজের দিনে ধর্মতলার ওই জায়গায় সভা হলে যান চলাচলে, যাত্রীদের সমস্যা হওয়ার কথা। তাই ওখানে সভা হয় না। তৃণমূল ওখানে সভা করে বলে বিজেপিকে সভা করতে দিতে হবে, এটা কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ হতে পারে না।’ তাঁর সংযোজন, ‘এখন বিজেপি নেতাদের মুখে বিচারপতি মান্থার নাম শোনা যায়। তিনি যা বলবেন তা-ই হবে।’ শমীকের প্রশ্ন, ‘ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে শুধু তৃণমূল সভা করবে, এটা গণতান্ত্রিক দেশে হয় নাকি? বিজেপি যদি বলে দিল্লিতে কোনও জায়গায় আর কেউ সভা করতে পারবে না, তা-ও হয় নাকি?’

বিজেপির তরফে নভেম্বরের প্রথম দিকে দু’বার কলকাতা পুলিশের কাছে সভার অনুমতি চাওয়া হয়। দু’বারই পুলিশ আপত্তি জানিয়ে একই বয়ানের চিঠি দেয়। বিচারপতির বক্তব্য, ‘আমি অবাক হচ্ছি, আপনাদের আপত্তি জানানো দু’টি চিঠির বয়ান দেখে। পুলিশের দেওয়া দু’টো চিঠির জবাব কী করে এক হয়?’ রাজ্যের তরফে আদালতে বলা হয়, ‘এটা সিস্টেম জেনারেটেড চিঠি। তাই বয়ান একই।’ আদালতের বক্তব্য, ‘আপত্তি জানানো হলে তাতে নির্দিষ্ট কারণ দেখানোর কথা। কেন যান্ত্রিক জবাব?’ উল্লেখ্য, ২৫ নভেম্বর বাঁকুড়ার কোতুলপুরের শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির পদযাত্রার অনুমতিও দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ, অনুমতি দিয়ে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন তৈরি করবে পুলিশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version