এই সময়: ওডিশায় এক্সকারসনে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ল আশুতোষ কলেজের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একটি দল। সেই দলে ৩৮ জন পড়ুয়ার সঙ্গে রয়েছেন ৫ শিক্ষিক-শিক্ষিকাও। এক ছাত্রের খোঁজ মিলছে না। এক ছাত্র এবং এক শিক্ষক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল ওই নিখোঁজ ছাত্রকে উদ্ধার করতে পারেনি। নিখোঁজ ছাত্রের পরিবার রওনা দিয়েছে ওডিশার বারবিলের উদ্দেশে। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই কলেজের তরফে ওডিশার স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা সবরকম সাহায্য করছেন। আমরা আরও তিনজন অধ্যাপককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি।’

গত মঙ্গলবার আশুতোষ কলেজের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের তৃতীয় সেমেস্টারের পড়ুয়া ও শিক্ষদের ওই দল রওনা দেন বারবিলের উদ্দেশে। এক্সকারসনে তাঁরা বিভিন্ন কল-কারখানা পরিদর্শনে যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের কলকাতায় ফেরার ট্রেন ছিল। এ দিন বারবিল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি নদী ও জলপ্রপাত দেখার জন্য দলটি থামে। পাথুরে রাস্তার ধারে সেই জলপ্রপাত দেখার সময়েই বিপত্তি ঘটে। ওই টিমে রয়েছেন কলেজের শিক্ষক শান্তনু চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। ছবি তুলতে দু’জন পড়ুয়া রিভার ব্যাঙ্কের একেবারে ধারে চলে যায়।

সেখানে প্রায় ২০ ফুটের খাদ ছিল। আচমকাই দু’জন পড়ুয়ার পা পিছলে যায়। একজন পড়ুয়া গিয়ে পড়ে খাদে। অন্য জন ঝুলতে থাকে।’ সেই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাকিরা। দৌড়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে গিয়ে পা ভেঙে গুরুতর আহত হন কলেজের শিক্ষক অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। নদীর খাদে ঝুলতে থাকা ওই ছাত্র নীলাব্জ গুপ্তকে উদ্ধার করা গেলেও, তারাশঙ্কর সরকার পড়ে যান। শান্তনু জানান, তাঁরা পুলিশ, দমকল, বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নদীতে সার্চ অপারেশনও শুরু হয়। যদিও সন্ধে নামতেই সেই অপারেশন বন্ধ করে দিতে হয়। আহত শিক্ষক এবং ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অরিজিতের পায়ে প্লাস্টার হয়েছে। টালিগঞ্জের বাসিন্দা নীলাব্জর শরীরে নানা জায়গায় আঘাত রয়েছে। দু’জনকেই অবশ্য হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা তারাশঙ্কর পড়াশোনার সূত্রে থাকেন সল্টলেকে। তারাশঙ্করের মামা মিঠুন নিয়োগী জানান, তাঁর ভাগ্নে অত্যন্ত মেধাবী এবং একজন ইউটিউবারও। ফলে ইউটিউব ভিডিয়োর জন্য শুট করতে গিয়েই এই বিপদ হলো কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তারাশঙ্করের নিখোঁজের খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে তাঁর দাদা অভিষেক সরকার এবং পরিবারের অন্য সদস্য, পাড়ার বন্ধুবান্ধবরা আরামবাগ থেকে দু’টি গাড়ি নিয়ে কেওনঝড়ের উদ্দেশে রওনা দেন। অভিষেক ‘এই সময়’-কে বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ার পর ভাইয়ের কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে সকালে-দুপুরে কথা হয়েছিল। ভাই ছবি তুলতে গিয়ে নীচে পড়ে গিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। উদ্ধারকাজ হয়েছে, কিন্তু ভাইকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।’ এ দিন সকালেই তারাশঙ্করের সঙ্গে পরিবারের শেষ কথা হয়। অভিষেকের সংযোজন, ‘সকালে ভাইয়ের বন্ধুদের সঙ্গে কথা হলেও এখন আর আমাদের ফোন কেউ তুলছেন না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version