নেতাজি ইন্ডোরে এদিনের সভার শুরু থেকেই বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে একের পর এক ইস্যুতে আক্রমণ শানাতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই মধ্যে রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে বলতে গিয়ে রাজ্যপাল তথা রাজভবনের প্রসঙ্গ টানেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বড় বড় রাজবাড়িগুলোতে এখন সেই জমিদারেরা বসে আছেন। একটা বিল পাশ করে না। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পর্যন্ত মানে না। সুপ্রিম কোর্ট বলে দিল, মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল বসে সব ঠিক করতে। তার পরেই আপনি নোট পাঠিয়ে দিলেন সব সাবজুডিস।’ মমতার কটাক্ষ, ‘কোর্টের নামেও মিথ্যা কথা বলছেন।’ এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, ‘কে আপনারা? বিজেপির বাছাই করা লোক (নমিটেডেট পার্সন) ছাড়া আর কিছু নন।’
এতেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। আক্রমণ আরও চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি টাকায় খাবেন। সরকারি টাকায় ঘুরবেন। সরকারি টাকায় পুরস্কার দেবেন। সরকারি টাকায় আরও কিছু করবেন। কালারফুল লাইফ লিড করবেন। আর একটা বিল আমরা পাশ করতে পারি না।’ এর পরেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এই তো মাননীয় স্পিকার এখানে বসে আছেন। যদিও স্পিকার হিসেবে নয়, তিনি আজ দলের বিধায়ক হিসেবে এখানে আছেন। ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন। একটা বিল পাশ করে না। যেন মনে হচ্ছে সব ডিক্টেটররা বসে আছে। হিটলারের প্রেতাত্মা সব। হিটলার নেই। কিন্তু নতুন জমিদারি প্রথায় নতুন জমিদার তৈরি হয়েছে।’
সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হয়ে আসার পরে প্রথম পর্বে রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্কই ছিল তাঁর। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে দু’পক্ষের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকে। অভূতপূর্ব ভাষায় রাজ্যকে আক্রমণ করতে শুরু করেন রাজ্যপাল। ভোট পরবর্তী হিংসা এবং রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যভবনে কন্ট্রোল রুমও খোলেন তিনি। কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্য আদায় নিয়ে পাল্টা শাসক দলও রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসে। যদিও তার পর থেকে দু’পক্ষই কিছুটা সংযম দেখাচ্ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সহমতে পৌঁছতে কফির টেবিলে তা মিটিয়ে নিতে বললেও কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা এদিন বলেন, ‘পুজোর পরে আমি তো গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তো কিছু বলেননি, উল্টে চিঠি পাঠিয়েছেন।’