মহম্মদ মহসিন, উদয়নারায়ণপুর
মাশরুম খাবার জিনিস কি না, এই নিয়ে বাঙালির মনে দ্বন্দ্ব ছিল। তখন থেকেই মাশরুম চাষ শুরু করে তা বাজারজাত করার জন্য ছুটে বেরিয়েছেন তিনি। কখনও তাঁকে মাশরুম নিয়ে ট্রেনে, বাসে হকারি করতে দেখা গিয়েছে। আবার কখনও তিনি মাশরুমের উপকারিতা বুঝিয়েছেন মানুষকে। অনেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেও নিরাশ হননি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের প্রত্যন্ত গজা গ্রামের বাসিন্দা অশোক পাল। প্রায় কুড়ি বছর ধরে অশোক পাল নিজের বাড়িতে মাশরুমের চাষ করেন।

পুষ্টিগুণ ও উপকারিতায় মাশরুমের জুড়ি মেলা ভার। সেই মাশরুম চাষ করেই এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন অশোক পাল। মাশরুমকে অনেকে ব্যাঙের ছাতা বলে হেয় করেছেন। তবু নিজের লক্ষ্যে অটুট থেকেছেন অশোক পাল। প্রবল ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রম আর ধৈর্যকে পাথেয় করে মাশরুম চাষকে নতুন দিগন্ত দেখিয়েছেন অশোক পাল। অশোকের বাড়ি জুড়ে এখন লক্ষ লক্ষ টাকার অত্যাধুনিক সব মেশিন। শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ঘরে অত্যাধুনিক মেশিনে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে একাধিক পদ্ধতিতে মাশরুম উৎপাদন করে চলেছেন তিনি।

অশোক বলেন, ‘কয়েক বছর আগে পর্যন্ত প্রতিদিন হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলায় প্রায় একশো কেজি মাশরুম সরবরাহ করতাম। গতানুগতিক ধারার বাইরে বেরিয়ে কী ভাবে বিকল্প পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা যায়, তা নিয়ে চর্চা করেছি।’ এর পাশাপাশি মাশরুম চাষ করে কী ভাবে স্বনির্ভর হওয়া যায়, কী ভাবে এর বাণিজ্যকরণ করা সম্ভব, সেই লক্ষ্যেই এখন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে প্রশিক্ষণ ও প্রচারের কাজ করে চলেছেন অশোক। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি মাশরুমের গুরুত্ব বেড়েছে। ফলে চাহিদাও বেড়েছে, তৈরি হয়েছে বাজার। খুব স্বল্প খরচেই বাড়িতে মাশরুম চাষ করা সম্ভব। এই চাষে লাভের হারও অনেক বেশি।’ মাশরুম চাষে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই অশোক পাল পেয়েছেন ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়াও তিনি পেয়েছেন রাজ্য সরকারের কৃষক রত্ন পুরস্কার। তবে থেমে না থেকে গোটা বাংলা জুড়ে মাশরুম চাষকে জনপ্রিয় করে তোলাই এখন অশোক পালের মূল লক্ষ্য।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version