কী ঘটনা?
রোগীর পরিবার সূত্রে খবর, প্রায় আট বছর ধরে গলার যন্ত্রণায় ভূগছিলেন সুবেজান বিবি। ইতিমধ্যে অনেক টাকা খরচ করে কলকাতা ও ভেলোরে চিকিৎসা করানো হয়েছে। চিকিৎসা করিয়েও সুস্থতার লক্ষণ দেখা যায়নি। পরে তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সুবেজান বিবির অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন ইএনটির বিভাগীয় প্রধান, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সোমনাথ সাহা, ডাঃ তিতলি বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডাঃ নীলাম্বর সহ অন্যান্যরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ‘ক্যারোটিড বডি টিউমারে’ আক্রান্ত হয়েছিলেন। অর্থাৎ হৃদপিণ্ড থেকে যে ধমনী দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয় সেই ধমনীতে এক ধরণের টিউমার তৈরি হয়। এই ধরণের টিউমার যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঘটনায় একদিকে রোগী মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে, অন্যদিকে বেঁচে ফিরলেও একদিকের অংশে প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেকারণে অনেক হাসপাতাল এই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করতে চায়না। তিন সপ্তাহ আগে প্রায় চার ঘন্টায় চেষ্টায় এই অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই ধরনের অস্ত্রোপচার ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকেই করতে চান না। কাজ করার ইচ্ছা থাকলে যে কোনও পরিকাঠামোতেই করা যায়, আর সেটাই করে দেখিয়েছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।’
কী বলছেন চিকিৎসক ও রোগীর আত্মীয়রা?
সুবেজান বিবির অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে থাকা ইএনটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সোমনাথ সাহা বলেন, ‘আমরা বিশাল কিছু করেছি বলে মনে করছিনা, এটা একটা সাধারণ কাজ। রোগীকে সুস্থ করার আমাদের দায়িত্ব। সেই পুরো কাজটা টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।’
এই ঘটনায় খুশী ‘ভেলোর ফেরৎ’ রোগী সুবেজান বিবির পরিবারের লোকেরাও। তাঁর ননদ আরজুন বিবি বলেন, ‘ গত আট বছর ধরে কলকাতা-ভেলোর ঘুরেও কোন কাজ হয়নি, অবশেষে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এসে রোগমুক্তি ঘটল। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাই।’