রডের বদলে বাঁশের কাঠামো নিয়ে ম্যানহোলের ঢাকনা ঢালাই বাঁকুড়া জেলায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের টেন্ডার ডেকে রীতিমত রড দিয়ে ঢালাই করে ম্যানহোলের ঢাকনা তৈরির কথা ছিল। কিন্তু, বাস্তবে এস্টিমেটের রড গায়েব। গ্রামবাসীরা দেখেন, রাতারাতি বাঁশের বাতা দিয়ে ঢালাই করে সোকপিট ঢাকা দিচ্ছে ঠিকাদার। বিষয়টি নজরে আসতেই শুরু হয় শোরগোল। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে খবর দিতেই পঞ্চায়েত ওই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ঘটনা বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের লেগো গ্রাম পঞ্চায়েতের সাগরমেজে গ্রামের।

লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৭০ টি টিউবওয়েলের পাশে ঢাকা দেওয়া ম্যানহোলের ঢাকনা তৈরির উদ্যোগ নেয় লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রতিটি ম্যানহোলের ঢাকনার জন্য বরাদ্দ হয় ২৫ হাজার টাকা। টেন্ডার অনুযায়ী টিউবয়েলের পাশে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পাঁচ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে গর্তের চারিদিক দশ ইঞ্চির গাঁথনি করার কথা। ম্যানহোলের ঢাকনার উপরের অংশে রড ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা ঢাকনা করার কথাও রয়েছে সেখানে। টেন্ডারে স্থানীয় নারায়ণ চক্রবর্তী নামের এক ঠিকাদার ৮ টি ম্যানহোলের ঢাকা তৈরির বরাত পান। তার মধ্যে একটি হল সাগরমেজে গ্রামের আইসিডিএস এর টিউবওয়েল সংলগ্ন সোকপিট।

জানা গিয়েছে, ওই খোলা সোকপিটের তৈরির কাজ শুরু হয়। কাজ শেষে সোকপিটের ঢাকনা তৈরির সময় গ্রামবাসীরা দেখেন ঢাকনার ঢালাই য়ে রড ব্যবহারের পরিবর্তে বাঁশের বাতা ব্যবহার করা হচ্ছে। রাতারাতি সেই বাঁশের কাঠামোর উপর ঢালাইয়ের কাজও করা হচ্ছে। এই ঘটনায় রীতিমতো অবাক স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ আটকে খবর দেয় লেগো গ্রাম পঞ্চায়েতে। খবর পেতেই গ্রামে গিয়ে ওই সোকপিট তৈরির কাজ আটকে দেন লেগো গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। বাঁশ দিয়ে ঢালাই করা ঢাকনার অংশও ভেঙে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় বিডিওকেও।

স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, আইসিডিএস কেন্দ্রে প্রতিদিন গ্রামের ছোট ছোট শিশুরা খেলা ও লেখাপড়া করে। যেভাবে এই সোকপিটের কাজ করা হচ্ছিল, তাতে যে কোনওদিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদের দাবী এ রাজ্যে সর্বস্তরে চুরি, দুর্নীতি আর কাটমানির রাজত্ব চলছে। এই ঘটনা সেই চুরি, দুর্নীতি আর কাটমানিরই ফলাফল। চোখের সামনে এমন অনিয়মের ঘটনা দেখে চমকে উঠেছেন সকলে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version