কলকাতায় একাধিক বহুতল রয়েছে। নিত্যনতুন বিল্ডিংয়ে আরও ধারে ভারে বাড়ছে শহর। আর এই নির্মাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের কণ্ঠে ‘পরিকল্পনার অভাব’ প্রসঙ্গ। সত্যিই কি বিপদে রয়েছে কলকাতা? এবার এই প্রশ্নের জবাবে আলোকপাত করলেন খড়গপুর আইআইটির ভূ-তত্ত্ব ও ভূ-পদার্থবিদ্যায় অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ।
কলকাতা কি বিপদে?
এই সময় ডিজিটালকে এই অধ্যাপক বলেন, ‘কলকাতার ক্ষেত্রে বিপদের কারণ হতে পারে তীব্র ভূমিকম্প।’ বাংলাদেশের কম্পন প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত। এই জায়গায় ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়। কলকাতার ‘আসল বিপদ’ নির্মাণকাজ নয়, বরং ভূমিকম্প, এমনটাই জানান তিনি।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘যদি কলকাতায় কোনও ভূমিকম্প হয় যার মাত্রা রিখটার স্কেলে ৫.৫-এর বেশি সেক্ষেত্রে শহরে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। মাটির নীচে যে অবস্থান থাকে অর্থাৎ ‘জিওলজিক্যাল সেট আপ’ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সেই সময় এই বহুতলগুলির বিপদের একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।’
বিষয়টি বিস্তারে ব্যাখ্যা করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ভূমিকম্প হলে চোরা মাটি তৈরি হবে। সেই সময় হাইরাইজ বা বহুতল বাড়িগুলি ধসে যেতে পারে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘এই জায়গাগুলিতে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বেশ কাছে। সেখানে ভূমিকম্প হলে জলটা যখনই পলিমাটির সংস্পর্শে আসবে তখনই তা কাদা মাটির মতো হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বহুতলগুলি যদি বাড়ি তৈরির সময় ‘পাইলিং’ ঠিক মতো না হয়, তা হলে সমস্যা হতে পারে এবং বাড়ি ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তবে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত না হলে আপাতত শহর কলকাতাকে নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, সেই বিষয়ে আশ্বস্থ করেছেন এই বিশেষজ্ঞ। উল্লেখ্য, একাধিক বিশেষজ্ঞ বলছেন অপরিকল্পিত নির্মাণের ফলে বিপদের মুখে রয়েছে শহর কলকাতা। শুধু কলকাতা নয়, এই প্রসঙ্গে তাঁরা টেনে এনেছেন হাওড়াকেও। সাধারণ মানুষকে পরিবেশ নিয়ে সচেতন করতেও শোনা গিয়েছে একাধিক বিশেষজ্ঞকে।