এই সময়, শিলিগুড়ি: জলপাইগুড়িতে দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনার পরে এ বার শিলিগুড়িতেও মা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় কাঠগড়ায় এক তৃণমূল নেতা। গত বছর জলপাইগুড়িতে সমাজসেবী সুবোধ ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রী অপর্ণা ভট্টাচার্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। সুইসাইড নোটে তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন নেতাকে দায়ী করেন।

রবিবার শিলিগুড়ির শান্তিনগরে লতা সরকার ও তিয়াসা সরকারের আত্মহত্যার ঘটনাতেও উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট। ওই সুইসাইড নোটে শিলিগুড়ি জেলা তৃণমূল কমিটির সম্পাদক তথা নিউ জলপাইগুড়ির নেতা প্রসেনজিৎ রায় ও তাঁর অনুগামীদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে।

তিনি বলেন, ‘মা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দল কখনই কাউকে আইন বিরুদ্ধ কাজে উৎসাহ দেয় না। যদি এমন কিছু ঘটে থাকে তাহলে পুলিশ আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে।’ রবিবার রাতেই লতা দেবীর স্বামী সাধন সরকার শিলিগুড়ির আশিগড় ফাঁড়িতে এই ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অবশ্য কাউকে এখনও গ্রেফতার করেনি।

অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ রায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘গত আট মাসে সাধন সরকারের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। ফোনে কথা হয়নি। ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।’ কয়েক বছর আগে নিউ জলপাইগুড়ির কার্গো কমপ্লেক্সে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হন প্রসেনজিৎ। ফের তাঁকে দলে নেওয়া হয়। পরে জেলা কমিটির সম্পাদক করা হয় তাঁকে।

রবিবার দুপুরে শিলিগুড়িতে পেশায় ব্যবসায়ী সাধন সরকার-এর স্ত্রী লতা ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তিয়াসার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না-হলেও পরে ওই ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। সাধনবাবু পেশায় প্রোমোটার। তৃণমূলের সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক ভাবে জড়িত থাকার সুবাদে প্রসেনজিৎ রায়ের সঙ্গে সখ্যতা ছিল।

কয়েক মাস আগে দু’জনের সম্পর্কে চিড় ধরে। মনোমালিন্যের কারণ, দু’টি জমি নিয়ে গোলমাল। শান্তিনগরে প্রসেনজিৎ রায়ের এক অনুগামীকে দশ লাখ টাকা দিয়েও জমির দখল পাচ্ছিলেন না তিনি। দেশবন্ধুপাড়ায় একটি পৌনে আট কাঠা জমিতে প্রোমোটিংয়ে উদ্যোগী হলে প্রসেনজিৎ রায় ওই কেনাবেচার সঙ্গে জড়িয়ে যান। এবং মালিকপক্ষকে রাজি করিয়ে অন্যত্র জমিটি বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ।

Deepfake Scam : ডিপফেকের শিকার প্রবীণ ব্যক্তি, IPS-র ছবি-ভয়েস নকল করে টাকা হাতাল অপরাধীরা
কিন্তু সাধনবাবু বায়নার ২৫ লাখ টাকা আজও ফেরত পাননি। এই নিয়ে চাপ দিলে প্রসেনজিতের অনুগামীরা তাঁর বাড়িতে এসে প্রাণে মারার হুমকি দিত বলে অভিযোগ। সাধনবাবুর জানিয়েছেন, প্রতিদিনের হুমকি, বিবাদ, মারধরের ঘটনা মেনে নিতে পারেননি তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version