পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রধান শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে। সংশ্লিষ্ট জেলায় প্রধান শিক্ষকের প্যানেল তৈরি হওয়ার পরে কোনও কাউন্সেলিং হয়নি, এমনটাই দাবি করেছিলেন মামলাকারী।

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের বাড়ির কাছে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগকে সামনে রেখে পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি সার্কেলের সাত জন শিক্ষক আদালতের দ্বারস্থ হন। মঙ্গলবার মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে। এদিন বিচারপতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘যারা আপনাদের হাতে তৈলমর্দন করবে তাদের পছন্দমত স্কুলে পোস্টিং দেবেন?’

এখানেই শেষ নয়, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার প্রশ্ন ‘মামলাকারি অনেক কিছুই চাইতে পারেন। তিনি বলতে পারেন তাঁকে বান্ধবীর বাড়ির কাছে পোস্টিং দেওয়া হোক। কিন্তু, পোস্টিংয়ের নির্দিষ্ট বিধি কোথায়? হাওড়ায়, বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনায় কাউন্সেলিং হলে পূর্ব মেদিনীপুরে কেন নয়?’
বারবার জিজ্ঞাসা করা হলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ বা রাজ্য কেউই নির্দিষ্ট বিধি দেখাতে পারেনি, এমনটাই মন্তব্য করেন বিচারপতি।

২০১৬ সালের যে বিধি রয়েছে তার মধ্যে কোথাও কাউন্সেলিং বা পোস্টিং প্রক্রিয়া নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু লেখা নেই। এই কারণে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলি পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা পেয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য বিচারপতির।

পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ, ‘যদি এখনও কোনও শূন্যপদ থাকে সেক্ষেত্রে নিয়োগ করা যাবে না।’ রাজ্য এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের হলফনামা তলব করেছে হাইকোর্ট। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে ১৮ ডিসেম্বর।

কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেক্ষেত্রে কি আগামী দিনে কাউন্সেলিং বা পোস্টিং সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধি তৈরি হতে পারে! তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। উল্লেখ্য, পুজোর আগেই পূর্ব মেদিনীপুরে নিয়োগ সংক্রান্ত খুশির খবর শোনা গিয়েছিল। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৯১২ জনকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়।

নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় তমলুকের নিমতৌড়ির শিক্ষক ভবন থেকে। এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানিয়েছিলেন, নোটিশের ভিত্তিতে যাঁরা প্রোমোশনের জন্য আবেদন করতে চান তাঁরা করতে পারেন। পুজোর আগেই তাঁরা নিয়োগপত্র তুলে দিতে চেয়েছিলেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version