এই সময়, বর্ধমান: আধঘণ্টার রাস্তা পেরোতে সময় লেগেছে ৩-৪ ঘণ্টা। সময়মতো বর্ধমানের স্কুলে পৌঁছতে পারেনি মেমারি, শক্তিগড়, গাংপুর এলাকা থেকে আসা বেশ কয়েকটি স্কুলবাস। কলকাতায় সকাল ৮টায় বাসে চেপে বর্ধমানে বিকেল সাড়ে ৩টেয় নেমেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ যানজটের জেরে এমনই সমস্যার সম্মুখীন হতে হলো সাধারণ মানুষকে। এমনকী কলকাতা থেকে বর্ধমান আসার ওই লেনে এদিন আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও।

একে নিম্নচাপের জেরে দিনভর প্রবল বৃষ্টি, তার উপর দীর্ঘদিন ধরে স্লথ গতিতে চলা জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ- এই জোড়া ফলায় এদিনের যানজটে নাজেহাল হতে হলো কয়েক হাজার মানুষকে। অভিযোগ, যানজট কাটাতে মেমারি ও শক্তিগড় থানার উদ্যোগী ভূমিকা চোখে পড়েনি। কলকাতা থেকে এসবিএসটিসি-র বাসে বর্ধমানে আসা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘রাস্তায় পুলিশ-প্রশাসন রয়েছে বলে মনে হলো না। পালসিট পেরিয়ে একই জায়গায় আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে, একচুলও বাসের চাকা এগোয়নি।

পুলিশ আধিকারিকদের ফোন করলাম। তাঁরাও সে ভাবে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিলেন না। সকাল ৮টার বাসে চেপে বিকেল সাড়ে ৩টেয় বর্ধমানে নেমেছি। খুবই তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো।’ আর এক বাসযাত্রী বামাপদ ঘোষের অভিযোগ, ‘যানজটে ফেঁসে থাকা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সঙ্গে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। শক্তিগড় থানা বলছে, মেমারি থানা এলাকায় যানজটের জন্য এটা হয়েছে। আর মেমারির পালসিট ফাঁড়ির পুলিশ বলছে, ওদের দিকে নাকি কোনও জ্যামই নেই।’

এদিকে, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের পাল্টা দাবি, রাস্তা সম্প্রসারণের জেরেই যানজট তৈরি হচ্ছে। ঠিকাদার সংস্থার ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে সবাইকে। বহু জায়গাতেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য মেন রোড বন্ধ থাকায় সার্ভিস রোডে সব গাড়ি চলছে। সেখানে কোথাও কোনও ভাবে একটি গাড়ি বিকল হয়ে গেলেই যানজট দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে।

সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে বর্ধমানের উল্লাস মোড় এলাকায়। এখানে উড়ালপুলের কাজ প্রচণ্ড ধীর গতিতে চলায় গতি কমছে গাড়ি চলাচলেও। একই বক্তব্য জেলা পুলিশের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) অতনু ঘোষালের। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় যানজটের অন্যতম কারণ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ধীর গতির কাজ। যেখানে-সেখানে রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে, গাড়ির অভিমুখ ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এখন রাস্তায় যা অবস্থা, কোথাও আধ ঘণ্টার জন্য জ্যাম লেগে গেলে সেই জট ছাড়তে সময় লাগছে ৬-৭ ঘণ্টা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোচ্ছে না। শেষে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version