আসা যাওয়ার মাঝে তাঁদের আলাপ। ট্রেনের ধাক্কাধাক্কি, যাত্রা শুরু-গন্তব্য অমিল বহু। কিন্তু, মনের মিল ষোলআনা। সংসার টু প্রেম, বিয়ে থেকে বাড়ির সমস্যা ট্রেনের সেই বন্ধুদের সঙ্গে সবটুকু ভাগ করে নেওয়া সম্ভব। বয়সের কোনও ছক কষে দেওয়া নেই। সাহা কাকাও বন্ধু আকাশের। আর এই ‘ফাটাফাটি গ্রুপ’-এর সদস্য আকাশ হালদারের বিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর।

আর সহযাত্রীর জন্য তাই ট্রেনেই ধুমধাম করে আইবুড়োভাতের আয়োজন করেছিলেন গণেশদা, রুদ্রদা, সিংজিরা। ডাউন রানাঘাট লোকালের সেই দৃশ্যই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

নৈহাটির বাসিন্দা আকাশ হালদার প্রতিদিন ডাউন রানাঘাট লোকালের শহরে আসেন। বালিগঞ্জের কাছে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত তিনি। বছরের পর বছর তাঁর সঙ্গে ট্রেন সফর করছেন বেশ কিছু সহযাত্রী। আর এই সফরের মধ্যেই তাঁদের আলাপ এবং বন্ধুত্ব। কোনও সহযাত্রীর বিয়ে হলেই জমাটি আইবুড়োভাত খাওয়ানোর নিয়ম রয়েছে এই গ্রুপের।


এইবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ১৫ ডিসেম্বর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন আকাশ হালদার। তার আগে ট্রেনের দরজার সামনে বসল আইবুড়োভাতের আসর। কেউ আশীর্বাদ করলেন টাকা দিয়ে, আবার কেউ বাড়ি থেকে রেঁধে এনে খাওয়ালেন। ভাত, ডাল, মাংস, পায়েস-একেবারে এলাহি আয়োজন।

আকাশ বলেন, ‘আমাদের এই গ্রুপে অনেকেরই আইবুড়োভাত ট্রেনেই দেওয়া হয়েছে। সকলেই বাড়ি থেকে রেঁধে আনেন। আমার বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়ই বুঝেছিলাম যে এই আয়োজন করা হবে। অনেকেই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এনেছিলেন। প্রত্যেকের ভাগে আলাদা আলাদা পদ পড়েছিল। বুধবার শ্যামনগর স্টেশনের পর থেকে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। আর সেই ভিডিয়োই কলকাতা চিত্রগ্রাফি নামক একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে শেয়ার করা হয় এবং তা ভাইরাল হয়েছে।’

ট্রেন যাত্রীদের গ্রুপের প্রত্যেকেই বাড়ি থেকে কিছু না কিছু পদ রান্না করে এনেছিলেন। কারও ভাগে পড়েছিল ভাজা, কারও আবার ডাল। পদের পাশাপাশি সামান্যতম খামতি ছিল না আন্তরিকতায়। সকলেই তাঁদের আশীর্বাদ করেন।

তিনি আরও জানান, হবু স্ত্রী তানিয়া দাসের সঙ্গে তাঁর ফেরার ট্রেনে আলাপ হয়েছিল। তাঁর প্রেমিকা কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা। বিয়েতে এই বন্ধুদের প্রত্যেকেই হাজির থাকবেন বলে জানান আকাশ।

তাঁর কথায়, ‘ট্রেনেই সম এবং অসম বয়সী বন্ধু পেয়েছি। প্রত্যেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে খাইয়েছেন। ট্রেনে এভাবে আইবুড়োভাত ভোজের সারপ্রাইজ পেয়ে অত্যন্ত খুশি।’





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version