এবার পুলিশকে বেলাগাম আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা। বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার পর ‘স্থান পরিবর্তন করেছেন’ কিছু পুলিশ কর্তারা, এমনটাই দাবি করলেন মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বপন আলি এবং জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আইএনটিটিইউসির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভা থেকে করা মন্তব্যের জেরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পালটা সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরাও। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের শহিদ মোড়ে আইএনটিটিইউসির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শনিবার একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১(A) নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মোশারফ হোসেন, আইএনটিটিইউসির ব্লক সভাপতি সাহেব দাস, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান, যুব ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মক্রম আলি সহ অন্যান্যরা। সেই সভা মঞ্চ থেকেই নেতৃত্বদের সামনেই পুলিশকে বেলাগাম আক্রমণ করলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বপন আলি এবং বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিকাশ বলেন, ‘বিরোধীদের কাজ কী! মানলাম এখানে আমরা বিরোধী। কেন পঞ্চায়েত সমিতি যা খুশি তাই করে যাবে। আমি যদি মানুষকেই পাইয়ে দিতে না পারি তাহলে কীসের সরকার! কিছু কিছু অফিসার ভোটের পর থেকেই বিজেপির হাওয়ায় দুলছেন। সুড়সুড়ি লাগছে। বিছুটি নিয়ে এমন ঘষে দেব যে সুড়সুড়ি বসে যাবে।’

পরে আবার নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দেন এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার মানুষের সরকার। কিছু কিছু অফিসারকে দেখেছি মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে। আমাদের কাজ জনগণের কাজ করা। কিছু অফিসার নিজেদের জায়গা থেকে স্থান পরিবর্তন করছে।’

অন্যদিকে, স্বপন আলি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূল কর্মীদের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্যই পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি হাত ছাড়া হয়েছে তৃণমূলের।’

আর রাজ্য শাসক দলের দুই নেতার মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এতদিন বিভিন্ন সময় রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা যেত বিরোধীদের। এবার রাজ্য শাসক দলের নেতার কণ্ঠে শোনা গেল এই সুর। যদিও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এই মন্তব্য ‘ব্যক্তিগত’ বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। দুই তৃণমূল নেতার এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তপ্ত হরিশ্চন্দ্রপুরের রাজনীতির পারদ।

অন্যদিকে, তৃণমূল নেতাদের কণ্ঠে রাজ্য পুলিশ নিয়ে এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা কিষাণ কেডিয়ার কটাক্ষ, ‘তৃণমূল এই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। আসলে রাজ্য-জুড়ে ইডির হানা চলছে। হয়তো হরিশ্চন্দ্রপুরেও আসতে পারে। তাই দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’

কংগ্রেস নেতা আবদুস শোভানের দাবি, পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করার পরেও তৃণমূল হেরে গেছে। হারের জ্বালা সহ্য না করতে পেরে তৃণমূলের এই মন্তব্য কংগ্রেস সিপিএমের নৈতিক জয়। চুরি করতে না পেরে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এরপর এদের বহরমপুর পাগলা গারদে নিয়ে যাওয়া হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version