লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। নিয়ম অনুযায়ী, একাধিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে মহুয়াকে। এমনকী তাঁর সাংসদ এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কী হবে তা নিয়ে জেলাজুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। টাকারই বা কী হবে? এই প্রশ্নগুলিই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নানান মহলে।

সাংসদনামা…

প্রত্যেকজন সাংসদ সদস্য বছরে ৫ কোটি টাকা পান। প্রথমে আড়াই কোটি টাকা পান, সেটা শেষ হওয়ার পর আবার বাকি আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয় বলেই জানা গিয়েছে। প্রথম টাকা ঠিক মতো খরচ করতে না পারলে পরের টাকা দেওয়া হয় না। টাকা পেতে প্রকল্প জমা দিতে হয়। অর্থাৎ কিস্তির টাকা পেতে কাজ করে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট (ইউসি) দিতে হয়। যদিও কোভিডের কারণে এবার ২৫ কোটি টাকা পাননি কোনও সাংসদই। প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, ২৫ কোটির জায়গায় এবার ১৭ কোটি টাকা মোট পাওয়া গিয়েছে।

কী কী কাজ হয় এই টাকায়?

সাংসদ এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় সাধারণত রাস্তাঘাট, পানীয় জলের ব্যবস্থা, সেতু নির্মাণ, আলোর ব্যবস্থা, হাসপাতাল-স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের মতো একাধিক উন্নয়নের কাজ হয়ে থাকে। কোভিডের সময়ও এই টাকায় হাসপাতাল সংক্রান্ত নানান গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে। টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায় কোনও সাংসদ বড় কাজে হাত দেন, কেউ আবার ছোট ছোট জরুরি কাজ সারেন একাধিক ব্লকে।

‘কালই আমার বাড়িতে সিবিআই আসবে’ বিস্ফোরক মহুয়া মৈত্র


কী ভবিষ্যৎ মহুয়ার MPLAD-র টাকার?

কলকাতা শহরে পুরসভা এবং জেলার ক্ষেত্রে জেলা পরিকল্পনা ও রূপায়ন দফতর (DPLO) এই টাকায় প্ল্যান অনুমোদনের পর কাজে হাত দেয়।
একাধিক জেলার পরিকল্পনা ও রূপায়ন আধিকারিকরা বলছেন, গাইড লাইনে এরকম ক্ষেত্রে কী করণীয় তা পরিষ্কার করে উল্লেখ নেই। এক আধিকারিকের কথায়, ‘নিয়ম অনুযায়ী, যে কাজগুলির জন্য প্রস্তাব জমা পড়েছে, সেগুলির কাজ হবে। কিন্তু, প্ল্যান জমা দিতে না পারলে, সেটা যেকোনও কারণেই হোক না কেন, নতুন করে কোনও কাজ হবে না। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পর ওই টাকাও ফেরৎ যাবে। এই টাকা আর পরের বছরে যোগ হওয়ার কোনও সুযোগ থাকে না।’

মহুয়ার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কাজের খতিয়ান

কাজের খতিয়ান ব্লকের নাম খরচ (টাকায়)
তেহট্টে সেতু নির্মাণ তেহট্ট-১ ৪০, ৯৫,৭৭৮
পলাশীপাড়ায় কোভিড সোয়াব কালেকশন সেন্টার তেহট্ট-২ ২, ৮২, ৩৬০
স্কুলে মিড-ডে মিল খাওয়ার জায়গার ব্যবস্থা করা কৃষ্ণনগর-১ ৮,০০০০০
চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির পাগলখালিতে রাস্তা নির্মাণ চাপড়া ৪৫,০০০০০
স্টেডিয়াম গ্য়ালারি এবং ড্রেসিং রুম তৈরি তেহট্ট-২ ৩০০০০০০
করিমপুর বাস স্ট্যান্ডে টয়লেট কমপ্লেক্স করিমপুর-১ ১০০০০০০
করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চোখের অপারেশন থিয়েটার করিমপুর-১ ১৩৯৪৪৪৫
দেপাড়া বিষ্ণুপুর হাইস্কুলে কমিউনিটি হল কৃষ্ণনগর-১ ৯০০০০০
হরিচাঁদ গুরুচাঁদ স্টেডিয়ামে LED স্ক্রিন বসানো তেহট্ট-১ ৩০০০০০
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সংস্কার কৃষ্ণনগর-১ ব্লক ১৬৯৭৫৯৭

Mahua Moitra : সংসদ থেকে বহিষ্কার, এবার সুপ্রিম কোর্টে মহুয়া মৈত্র
নদিয়া জেলার পরিকল্পনা ও রূপায়ন আধিকারিক অনন্য জানাকে এই সময় ডিজিটালে-র তরফে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে না দেখে কিছু বলতে পারব না।’ মহুয়ার ঘনিষ্ঠ মহলের যদিও জোর গলায় দাবি, তিনি সব টাকাই খরচ করতে পেরেছেন। সমস্যা হয়নি, ফলে এই নিয়ে অহেতুক আলোচনার কিছু নেই। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, পাঁচ বছর প্রায় শেষ। এখন আর বেশি টাকা কোনওভাবেই পরে থাকার কথা নয়, ফলে এখন বিষয়টি নিয়ে খুব যে সমস্যা হবে এমনটা নয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version