অদম্য মনের জোর আর পরিশ্রম। জোড়া মন্ত্র তাঁর সাধনার অন্যতম অঙ্গ। যা তাঁকে এনে দিয়েছে একের পর এক শৃঙ্গ জয়ের কৃতিত্ব। আগামী প্রজন্ম এই পর্বতারোহণকে আপন করে নিক; ভারতবর্ষ যেমন ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকে, একদিন পর্বতারোহণ নিয়েও শিখরে পৌঁছবে। আন্তর্জাতিক পর্বত দিবসে এই বার্তাই দিলেন পিয়ালী বসাক।
আগামী প্রজন্ম এগিয়ে আসুক
দু’চোখে এখনও রয়েছে তাঁর স্বপ্ন। পর্বত আরোহণে দেশকে এক নম্বর স্থানে পৌঁছতে হবে। সারা পৃথিবীতে আজ ক্রিকেট নিয়ে সকলের উৎসাহ রয়েছে, তেমনি পর্বত আরোহণের ক্ষেত্রেও পৃথিবীতে ভারত যাতে এক নম্বর হতে পারে সেটাও স্বপ্ন তাঁর। সেই ভাবেই নিজেকে তৈরিও করেছেন পিয়ালী। অনেক রকম অভিযানের পরিকল্পনাও রয়েছে। যদিও সবকিছুর বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। তবে আগামী প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পাহাড় শিখর ছোঁয়ার আনন্দে মাতুক, সেটাই চান পিয়ালী।
ক্রিকেটের ন্যায় জনপ্রিয়তা
পিয়ালী জানান, ক্রিকেটের ক্ষেত্রে অনেক বড় বড় স্পন্সর এগিয়ে আসেন। কিন্তু পর্বত আরোহনকারীদের এখনো সেভাবে কোন স্পন্সর আসেনি। সরকার যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে ক্রিকেটের মতো আমাদের দেশ ও পর্বত আরোহণে এক নম্বর স্থানে পৌঁছতে পারবে।
আগামী প্রজন্মের জন্য পিয়ালীর বার্তা , ট্রেকিং ও মাউন্টেনিয়ারিং-এ সবারই এগিয়ে আসা উচিত। তার সঙ্গে পাহাড় ও প্রকৃতিকে পরিষ্কার রাখতে হবে। দার্জিলিং হিমালয় মাউন্টেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে, সেখানে প্রকৃতিকে যাতে যত্ন নিয়ে তার জন্য সেখানে শিক্ষাও দেওয়া হয়। অনেক ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে বিভিন্ন প্লাস্টিক, বোতল ফেলে দেয়। এর ফলে পাহাড়ের অনেক ক্ষতি হচ্ছে । পর্যটকদের সচেতন করার জন্য পর্বত আরোহীদের এগিয়ে আসা উচিত প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য। পিয়ালী বলেন, ‘আমার স্বপ্ন পর্বত আরোহণে আমাদের রাজ্য ও দেশ পৃথিবীর এক নম্বরে নিয়ে যেতে পারি।’ আগামী বছর ২০২৪ সালে বিনা অক্সিজেনে কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় করার লক্ষ্য রয়েছে।
ছোট থেকেই পাহাড় ভালবাসেন চন্দননগরের বাঙালি পর্বত আরোহী পিয়ালী বসাক। আর্থিক প্রতিকূলতা সত্বেও একের পর এক শৃঙ্গ জয় করেছে এই বঙ্গ তনয়া। পাহাড় চড়ার টানে একের পর এক আট হাজারি শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে বেরিয়ে পড়েন পিয়ালী। ২০১৮ সালে পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম শৃঙ্গ মানাসুলু জয় করেন পিয়ালী, তারপর ২০২১ সালে সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গ ধৌলাগিরি জয়। ২০১৯ সালে এভারেস্টের কাছাকাছি গিয়েও ফিরতে হয়েছিল তাকে খারাপ আবহাওয়ার জন্য । ২০২২ সালের ২২শে মে অক্সিজেন ছাড়াই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে ওঠেন পিয়ালী এবং তার দুই দিন পরেই পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম শৃঙ্গ লোৎসে জয় করেন।