এই সময়: আমূল বদলে গিয়েছে সল্টলেকের বনবিতান। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে মর্নিং ওয়াকারদের জন্য ফি চালুর সিদ্ধান্ত এর নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে জানাচ্ছে বন দপ্তর। ফি নিয়ে কিছু মানুষ আপত্তি তুললেও তার পরে গত ক’মাসে বনবিতান যে ভাবে বদলেছে, তাতে খুশি মর্নিং ওয়াকাররা। তাঁরা চান, এই সিদ্ধান্ত বজায় থাকুক।

বছর দেড়েক আগেও বনবিতানে সবচেয়ে বড় সমস্যার কারণ ছিল কুকুর। অনেকে তাই মর্নিং ওয়াকে যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই গিয়ে দেখা গেল, কুকুরের সংখ্যা হাতে গোনা। লেকটাউন বি ব্লকের বাসিন্দা সুতপা চৌধুরীর বক্তব্য, ‘গত ছ’মাস ধরেই কুকুরের উপদ্রব আর নেই বললে চলে। এখন নির্ভয়ে হাঁটতে পারি।’ দীর্ঘদিন বেহাল ছিল গাছের দু’পাশ দিয়ে হাঁটার রাস্তাও। তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি যে চেয়ারগুলি ভাঙা অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে ছিল, সারানো হয়েছে সে সবই।

সল্টলেক জিডি ব্লকের তৃষিত কুমার মজুমদার গত ১৫ বছর ধরে মর্নিং ওয়াক করেন বনবিতানে। তাঁর কথায়, ‘বনবিতানের মধ্যে থাকা চারটি শৌচালয়ই নোংরা হয়ে থাকত। কিন্তু, গত ক’মাসে অনেক পরির্বতন হয়েছে। টাকা দিতে অনেক আগে থেকেই আমরা রাজি ছিলাম। তবে, চেয়েছিলাম রক্ষণাবেক্ষণটা ঠিক ভাবে হোক। সেটা হচ্ছে।’

মর্নিং ওয়াকারদের অভিযোগ ছিল, পার্কের চারপাশে নোংরা সাফাই হয় না। কিন্তু, এখন সেটাও ভালো ভাবে হচ্ছে। ভিতরের দু’টি বড় জলাশয় দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানা এবং নানা আবর্জনায় ভর্তি থাকত। এ দিন দেখা গেল, জলাশয়ে কচুরিপানা নেই। চালু হয়েছে বোটিং।

বনবিতান এতদিন ফরেস্ট ডিরেক্টরেটের অধীনে থাকলেও, বছর খানেক আগে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গিয়েছে ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের হাতে। তার পরেই মর্নিং ওয়াকারদের জন্য ফি চালু হয়েছে। পাশাপাশি, বছর দেড়েক আগেও যেখানে ৫ জন জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১২। পার্কের রক্ষণাবেক্ষণে আগে ১১ জন কর্মী থাকলেও এখন আছেন ২৬ জন। সারানো হয়েছে ভেঙে যাওয়া পাঁচিলও।

বন দপ্তরের ডেপুটি কনজ়ারভেটর রামপ্রসাদ বদানার বক্তব্য, ‘মর্নিং ওয়াকাদের থেকে মাসে একটা ভালো টাকা আসায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ভালো ভাবে করা যাচ্ছে। তা ছাড়া, সরকারি টাকাও খরচ করা হচ্ছে।’ ভবিষ্যতে বনবিতানকে আরও সুন্দর করে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version