বাজারে চলে এসেছে জয়নগরের আসল মোয়া। কিন্তু, নকল মোয়ায় ইতিমধ্যেই সুন্দরবন থেকে বনগাঁ ছেয়ে গিয়েছে। নকল মোয়া কিনে যেমন ঠকছেন অনেকে, তেমনই অনেকে শীতের এই প্রিয় জিনিসটির থেকে দূরত্ব আরও বাড়াচ্ছেন। নেপথ্যে, ভেজাল তথা নকলের দাপট। এই নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ ক্রেতা-বিক্রেতা দু’পক্ষই। ২০১৫ সালেই জিআই বা ‘জিয়োগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন’ তকমা আদায় করে নেয় জয়নগরের মোয়া। তবু খাস জয়নগরেও জাল মোয়া বিক্রি এখনও ঠেকানো যায়নি। এই সমস্যা কাটিয়ে গোটা রাজ্য তথা দেশে আসল জয়নগরের মোয়া পৌঁছে দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোয়া নির্মাতাদের জোট। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরও তাঁদের সহযোগিতা করছে।

হারিয়ে যাচ্ছে জয়নগরের মোয়ার স্বাদ! কী বলছেন শিউলিরা?


কী ভাবে চিনবেন আসল মোয়া?

১. জয়নগরের মোয়ার উপকরণ দেখলেই বোঝা যাবে সেটা আসল না নকল, প্যাকেটে লেখা দেখেই তা বোঝা যাবে।
২.উচ্চমানের ধানের সুগন্ধি খই, নলেনগুড়, কাজু, কিসমিস, খোয়া ক্ষীর, ঘি থাকে আসল মোয়ার উপকরণে।
৩. মোয়ার যেকোনও বাক্স কেনার আগে উপকরণ, অথরাইসড ইউ জার নম্বর, আর কোথায় তৈরি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।
৪. বারকোড চালু করেছেন মোয়া ব্যবসায়ীরা। তা স্ক্যান করে আসল-নকল বোঝা যাবে।
৫. ব্যবসায়ীরা বলছেন, গন্ধেই কিন্তু আপনি আন্দাজ পেয়ে যাবেন আসল-নকলের।

মোয়ার উপকরণ। নিজস্ব চিত্র।

জয়নগর মোয়া নির্মাণ সোসাইটির সম্পাদক অশোক কয়াল এই সময় ডিজিটাল-কে বলেছেন, ‘ভালো মানের গুড় পাওয়ার পরেই আমরা মোয়া তৈরি শুরু করেছি। আমরা চেষ্টাই করছি মানুষ যাতে আসল মোয়া কিনে তা খেতে পারেন। সেজন্য যা যা করার আমরা করছি। ’

কেমন দাম মোয়ার?

জয়নগরের মোয়া বিভিন্ন রকম দামের পাওয়া যায়। তবে সাধারণত ২৫-৩০ টাকা পিস হয়ে থাকে। আবার ৫০-৬০ টাকা পিস হিসাবেও পাওয়া যায়। ১৮০ টাকার প্যাকেট যেমন আছে তেমনই ২৫০ টাকা, ৪৫০ টাকার প্যাকেটও মেলে।

কেমন হবে আসল মোয়ার প্যাকেট
মোয়া ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে এই ব্যবসায় খানিক ভাঁটা পড়েছে। মূল কারণ, উৎকৃষ্ট পরিমাণ নলেন গুড়ের অভাব। অনেক ক্রেতাই বলেন, আগের মতো স্বাদ-গন্ধ আর মেলে না জয়নগরের আসল মোয়াতেও। মোয়া তৈরির ক্ষেত্রে অন্যতম মূল উপাদান হল নলেন গুড়। হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেও তেমনভাবে এখন আর লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না গুড় ব্যবসায়ীরা। ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর, কুলতলী, বাসন্তী, গোসাবা এলাকার শিউলিরাও এখন অন্য ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ মানছেন, মোয়ার গুণগত মান নির্ভর করে কনকচূড় ধানের উপর। বাজারে এই ধানের ঘাটতি থাকায় অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অন্য ধানের খই দিয়ে মোয়া তৈরি করেন মাঝে মাঝে।

মোয়াশিল্পের শুরু জয়নগর ও বহড়ু এলাকায়। আন্তর্জাতিক বাজারেও মোয়া ঢুকে পড়েছে বছর কয়েক আগেই। এখন রফতানি বাড়ছে বছর বছর। তবে সার্বিকভাবে প্রয়োজন নকল মোয়া তৈরি পুরো বন্ধ করা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version