ঠগ বাছতে গাঁ উজার হওয়ার দশা জেলা প্রশাসনের! রূপশ্রী প্রকল্পে ভুয়ো আবেদন বাড়ছে জেলায় জেলায়। আবেদনকারীদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে সরকারি কর্মীরা জানতে পারছেন, অনেকের কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়েছে। কারও আবার জোড়া সন্তানও রয়েছে। কেউ বিয়ের ভুয়ো কার্ড দাখিল করেছেন তো কেউ ভুয়ো পাত্রের ছবি দেখিয়েছেন। নকল বাবা-মা আনতেও কেউ দ্বিধা করেননি। বিবাহিত মহিলারা প্রকল্পের সুযোগ নিতে অবিবাহিত সেজে আবেদন করছেন। অনেকে নিজের আত্মীয়কে পাত্র সাজিয়ে সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ একাধিক জেলায় বাড়ছে এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ। যা নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত প্রশাসনের নীচুতলার কর্মীরাও। যদিও সব খতিয়ে দেখে দ্রুত এই নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে সতর্কও করা হচ্ছে তাঁদের।

রূপশ্রী প্রকল্পে এমনিতেই আবেদনের পরিমাণ বাড়ছে জেলায় জেলায়। জানুয়ারি মাসে এই আবেদনের সংখ্যা আরও বাড়বে। আবেদন করার পর তদন্তের রিপোর্ট নির্দিষ্ট পোর্টালে ‘নোট’ দেওয়ার পরেই আবেদনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সপ্তাহে গড়ে হাজার দেড় হাজার করে আবেদন জমা পড়ার মতো নজির রয়েছে বিয়ের মরশুমে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, মানুষ এখন এই সব প্রকল্পের ব্যাপারে অনেকটাই সচেতন। সেই জন্য আবেদনও বেশি। আর অনেকেই নানান ফন্দি করে টাকা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজ্যের যে সব ব্লকগুলিতে বাল্যবিবাহ বেশি হয়, সেখানে এই ধরনের আবেদনের সংখ্যা বেশি।

উল্লেখ্য, ১৮ বছর বয়সের পরে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা পায় পরিবার। ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প চালু করেন। বিয়ের আগে নিমন্ত্রণ পত্র, পাত্র ও পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র ব্লক বা পুরসভা দফতরে জমা দিতে হয়। বার্ষিক দেড় লাখ টাকা আয়, এমন পরিবারগুলিই রূপশ্রী প্রকল্পের জন্যে আবেদন করতে পারেন। আবেদনের পর ব্লকের এক্সটেনশন অফিসারেরা তা তদন্ত করে দেখেন। সেই মতো নির্দিষ্ট পোর্টালে তিনি তদন্ত রিপোর্ট দেন। এরপর বিডিও বা মহকুমা শাসকের অনুমোদনের পর অর্থ দফতরের ছাড়ের পরেই উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢোকে। আর্থিক সংগতি নেই, এমন বহু পরিবার এই টাকা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন।

Rupashree Prakalpa Status: আবেদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মিলল টাকা, সরকারি প্রকল্পে নয়া নজির
ব্লকে ব্লকে এক্সটেনশন অফিসারেরা এই কাজ করেন। রূপশ্রীর তদন্ত করতে গিয়ে তাঁদের একেবারে নাস্তানাবুদ দশা। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতির জেরে দেরি হচ্ছে টাকা পেতে। ফলে বিয়ের পর টাকা মিলছে এমন ঘটনাও ঘটছে। তবে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে উপকৃত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version