দীর্ঘদিন তিন বছর পর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে বসছে পৌষ মেলার আসর। রবিবার থেকে শুরু হল মেলা। তবে এবার মেলায় আয়োজনের দায়িত্বে নিয়ে বিশ্বভারতীয় কর্তপৃক্ষ। মেলা আয়োজন করছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। আর রবিবার পৌষ মেলার ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখসহ অন্যান্য বিধায়করা। মেলা উদ্বোধনের পর ভার্চুয়াল মাধ্যমে একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কী বললেন মমতা?

এদিন কলকাতা থেকে পৌষ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভার্চুয়ালি মেলা উদ্বোধনের পর মমতা বলেন, ‘বিশ্বকবির বাংলার জন্য বিশাল অবদান। বাংলা ও দেশের জন্য বিশ্বভারতীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা যাবে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই জায়গা কেউ কলুষিত করুন, এটা আমরা কোনওভাবেই চাই না। বিশ্বভারতীর পরিবেশকে অক্ষুণ্ন রেখে এই মেলা করুন। কারণ অনেক মানুষ আসবেন। মেলায় কোনও গরিব-বড়লোকের সীমারেখা থাকে না। ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকে না। আপনারা আমাকে মেলাতে ভার্চুয়ালি উপস্থত থাকার যে সুযোগ দিয়েছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’

স্বৈরাচারী মনোভাব রাখলে হবে না

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী

বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীকেও কটাক্ষ করতে শোনা যায় তাঁকে। বীরভূম সফরে গিয়ে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, আশ্রমিক ও অধ্যাপকদের সঙ্গে পৃথকভাবে দেখাও করেন মমতা। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদ্দেশেও তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও ধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে বিশ্বভারতী চালালে হবে না। ভালবাসার সম্পর্ক রেখে কাজ করতে হবে। আশ্রমিক থেকে পড়ুয়া, সবাইকে সম্মান দিতে হবে। বিশ্বভারতী এইভাবেই এগিয়ে চলুক। বিশ্বভারতীর পৌষমেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি।’

এবারও দেখা দিয়েছিল জটিলতা

পূর্বপল্লির মাঠে পৌষমেলা করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তরফে জানানো বিশ্ববিদ্যালের দাবি মেনে ছোট করে মেলা করা সম্ভব না। তারপরই আসরে নামে জেলা প্রশাসন। বোলপুরের মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে বৈঠকে বসে কর্তৃপক্ষ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় মেলা করবে বীরভূম জেলা প্রশাসন। পূর্বপল্লির মাঠে মেলা করার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হবে। তারা অনুমতি দিলে সেখানেই মেলা হবে । নইলে জেলা পরিষদের মাঠে বসবে মেলার আসর। অবশেষে প্রশাসনকে মেলা করার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version