এই সময়: বজ্র আঁটুনির আশ্বাস ছিল দীপাবলিতেও। কিন্তু আদতে বাস্তবে যা ঘটেছিল, তাকে ফস্কা গেরো বললেও কম বলা হয় বলে মনে করেন পরিবেশ কর্মীরা। বাজির তাণ্ডবে যেমন দাঁত-নখ বের করেছিল শব্দদানব, তেমনই বায়ু দূষণের নিরীখে দিল্লিকে ছুঁয়ে ফেলেছিল কলকাতা। ছট পুজোতে আরও একবার শব্দ-দৈত্যের সাক্ষী হয়েছিল এই শহর।

এবার ইংরেজি নববর্ষ নিয়ে আতঙ্কিত পরিবেশ কর্মী থেকে আমজনতা। কারণ প্রতিবারই উৎসবের নামে কার্যত বাজি আর ডিজে-র তাণ্ডব চলে শহর জুড়ে। পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, বর্ষবরণের রাতে বাজির সঙ্গে বাড়তি আতঙ্কের কারণ ডিজে বক্সের দাপাদাপি। যাতে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে আগেভাগে ময়দানে নামে, সে জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

সবুজ মঞ্চ নামের সংস্থাটি বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে চিঠি পাঠিয়ে আবেদন করেছে, যাতে সব থানাকে আগেভাবে সাবধান করে দেওয়া হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘দীপাবলির সময় শব্দ-তাণ্ডবে আমাদের নানা সমস্যা পোহাতে হয়। কিন্তু বর্ষবরণ নিয়ে আগে থেকেই আতঙ্কে থাকতে হয়। কারণ, একই সঙ্গে বাজির পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব, আবাসনে তারস্বরে ডিজে বাজতে থাকে। তাতে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বার বার বলার পরেও আবাসনগুলিকে কোনও ভাবেই পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, শহরের আবাসনগুলিতেই আইন বেশি ভাঙা হচ্ছে।’

দিন দু’য়েক আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বাজির ব্যবহার নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে। নব বলেন, ‘এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। আর শুধু মাত্র নিজেদের ওয়েবসাইটে টাঙিয়ে কোনও লাভ হবে? এটা আরও বেশি করে প্রচার করা দরকার।’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি রাত ১১.৫৫ থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত বাজি ফাটানো যাবে। তাও কেবল মাত্র সবুজ বাজি। দীপাবলি এবং ছট পুজোতে দেখা গিয়েছে, রাজ্যে সবুজ বাজি যা বিক্রি হয়েছে, ফেটেছে তার বহুগুণ বেশি।

Tram In Kolkata : ট্রাম-হীন কলকাতা! তিলোত্তমার অঙ্গহানি
এছাড়াও আদালতের নির্দেশে লিমিটর ছাড়া কোনও রকম সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না বলা হলেও প্রতিবার ডিজের তাণ্ডবে নাকাল হতে হয় শহর এবং শহরতলির বাসিন্দাদের। একই সঙ্গে পরিবেশ কর্মীরা আতঙ্কিত বাতাসের মান নিয়েও। কারণ, শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের মান খারাপ হতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় বাজির তাণ্ডবের পরে বাতাসের মান কেমন হবে, তা নিয়েও শঙ্কিত তাঁরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version