১০৫ ডিগ্রি জ্বরে কাতরাচ্ছে মা। পাশে কাঁদছে ক্ষুদ্ধার্থ সাত দিনের শিশু। দৃশ্য দেখে বুক কাঁপছে পরিবারের। সেই সময়ই ত্রাতা হয়ে শিশুটিকে স্তন্যপান করান রামপুরহাট হাসপাতালের নার্স।

একাধিক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সাত দিনের একটি শিশু। স্বাভাবিকভাবেই সেই শিশু হাসপাতলে ভর্তি থাকায় সঙ্গে ছিলেন তার মাও। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাত্রে হঠাৎই জ্বর আসে শিশুটির মায়েরও। সূত্রের খবর, ১০৫ ডিগ্রি উঠে যায় তাঁর জ্বর। এদিকে খিদেতে কঁকিয়ে ওঠে ওই শিশুটি। দিশেহারা অবস্থা তার পরিবারের সদস্যদের।

আর তখনই ত্রাতা হয়ে শিশুটিকে স্তন্যপান করানোর জন্য এগিয়ে আসেন সিউড়ির বাসিন্দা ও রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্স রিয়া দাস। স্তন্যপান করে শান্ত হয় শিশুটি। এক মায়ের অসহায়তা দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি অপর মা। ছুটে গিয়েছেন সাহায্য করার জন্য।

বিষয়টি নিয়ে রিয়া দাস বলেন, ‘শিশুটির মায়ের বয়স কম। জ্বরের ঘোরে প্রচন্ড জোরে কাঁপছিলেন তিনি। সেই সময় বাচ্চাটাও খুব চিৎকার করছিল। সেই সময় আমি ভাবলাম ওর হয়তো খুব খিদে পেয়েছে। আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি। ওকে কোলে তুলে স্তন্যপান করায়। পাশাপাশি মায়ের চিকিৎসাও করি। আমার বাড়িতেও একটা ছোট শিশু রয়েছে। তাই ওদের কষ্টটা আমরা বুঝতে পারি।’

এক শিশুর যন্ত্রণায় অপর এক মায়ের এগিয়ে আসার ঘটনায় খুশি চিকিৎসকরাও। তাঁদের কথায়, ‘সেবিকাদের কাজ যে কোনও পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবা করা। এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির তৈরি হয়। একজন মানুষ হিসেবে যা করার সেই করেছেন রিয়া দাস। ওর এই পদক্ষেপের জন্য আমরা গর্বিত।’

Child Death : দিদির কোল থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক শিশুর, মর্মান্তিক ঘটনা রায়গঞ্জে
এদিকে খুশি ওই শিশুর পরিবারের সদস্যরাও। যন্ত্রনায় রীতিমতো আছাড় খাচ্ছিলেন ওই মহিলা। সেই সময় তাঁর শিশুকে স্তন্যপান করানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। এদিকে কোনওমতেই কান্না থামানো যাচ্ছিল না খুদের। এই পরিস্থিতিতে কার্যত দিশেহারা ছিল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, অপর এক মা এগিয়ে আসায় স্বস্তি পান তাঁরা।

সংবাদ মাধ্যমকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এম এস ভিপি পলাশ দাশ বলেন, ‘রিয়ার জন্য আমরা গর্বিত। মানবিকতায় নজির বললেন তিনি। এক মায়ের কোলে কিছুক্ষণের জন্য আশ্রয় পেল অপর মায়ের সন্তান। এই ঘটনায় একজন মানুষ হিসেবে ওর জন্য গর্ব বোধ করছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version