গানের কথায় ‘মানুষ মানুষের জন্য মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?’ সত্যিই তো মানুষই মানুষের জন্য। আর সেই প্রমাণই আরও একবার দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে এক টোটোচালক।

রাস্তার ধারে নালায় পড়ে রয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা। গলা অবধি ডুবে রয়েছেন নর্দমায়। টোটোচালকরা দেখতে পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। এরপর তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল হাজার হাজার টাকা। মোট ৬৪ হাজার ১৫ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক শহরের হসপিটাল মোড় সংলগ্ন এলাকায়।

শেখ মেববুব আলি নামে এক টোটোচালক বলেন, ‘আমার এক টোটোচালক ভাই সানোয়ার বলল একজন নর্দমায় পড়ে আছেন, চলো আমার তুলে দিয়ে আসি। এসে দেখছি শুধু মুখটুকু দেখা যাচ্ছে, বাকি শরীর জলের মধ্যে ডুবে রয়েছে। আমি আর সানোয়ার মিলে তুললাম। গায়ে কোনও কাপড় ছিল না। টোটো মোছার জন্য যে কাপড় ছিল সেগুলি ঢাকা দিয়ে বাড়ি গেলাম। এরপর বাড়ি থেকে পোশাক নিয়ে এসে আমি পরিয়েছি।’

মেহবুব আলি জানাচ্ছেন, ওই বৃদ্ধার সঙ্গে যে কাপড় ছিল সেগুলি কেটে দেখা যায় তার মধ্যে প্রচুর টাকা। নোটগুলি পাকিয়ে সেলাই করা ছিল। অত টাকা নজরে আসতেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপর সেই নোটের সেলাই কেটে দেখা যায় সেখানে টাকা ৬৪ হাজার ১৫ টাকা রয়েছে। ওই বৃদ্ধার যাতে ঠিকমতো চিকিৎসা হয় ও তাঁকে যাতে কোনও বৃদ্ধাশ্রমে রাখা যায়, সেই দাবিই জানাচ্ছেন ওই টোটোচালক।

যদিও ওই বৃদ্ধার নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। কিংবা কোন জায়াগা থেকে তমলুকের হসপিটাল মোড়ে পৌঁছলেন, কেউ তাঁকে সেখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছে কি না, কোনও কিছুই এখনও জানা যায়নি। বৃদ্ধার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিছু মাস আগে এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর। অভিযোগ, অসহায় এক বৃদ্ধাকে স্টেশনে ফেলে দিয়ে যায় তাঁর ছেলে। অবশেষে, ওই বৃদ্ধা মহিলাকে বিধায়কের নির্দেশে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় অশোকনগর রবীন্দ্র নিকেতনে। জানা যায়, আগরপাড়ার বাসিন্দা রুনু কর্মকারের বয়স ৭০-এর কোঠায়। শরীরের ডান হাত অনেকটাই অসাড়। ঠিক ভাবে হাঁটাচলাও করতে পারেন না তিনি। অভিযোগ, এহেন অসহায় বৃদ্ধাকেই তাঁর ‘গুণধর’ ছেলে অশোকনগর স্টেশনে ফেলে দিয়ে চলে যায়। অসহায় অবস্থায় দু’দিন অশোকনগর স্টেশনেই পড়ে ছিলেন তিনি। পরে ঘটনার খবর পৌঁছায় স্থানীয় বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর কাছে। তার নির্দেশেই, ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র নিকেতনে ভবঘুরেদের আশ্রয়স্থলে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version