বাঁকুড়া জেলার ঐতিহ্যবাহী মেলা হল মুকুটমণিপুর মেলা। সূচনা হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় ২৫ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে এই মেলার। তবে রাজ্যের এক মন্ত্রী জানালেন, মেলা শুরু এই সরকারের আমলেই। আদিবাসী দফতরের মন্ত্রী বুলু চিক বরাইকের এই মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়।

কী জানা যাচ্ছে?

সরকারি অর্থানুকূল্যে মুকুটমণিপুর মেলার উদ্বোধনকালীন ‘বিতর্কে’ জড়ালেন রাজ্যের আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। বৃহস্পতিবার ওই মেলার উদ্বোধনী ভাষণে তিনি দাবি করেন, ‘এই মেলা আগে হতো না, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই এই মেলা প্রতিবছর হচ্ছে’। আর এখানেই থামেননি মন্ত্রী। বক্তব্যের একেবারে শেষে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে সরকারী আধিকারিকদের উপস্থিতিতে তিনি ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ বলেও বক্তব্য শেষ করেন।

কী বলছে বিরোধীরা?

রাজ্যের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এই বক্তব্য ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বাম-বিজেপি উভয় শিবির থেকেই মন্ত্রী বুলু চিক বরাইককে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। সিপিআইএম বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি-র দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে নয়, বিগত বাম আমলেই মুকুটমণিপুর মেলার সূচনা। ১৯৯৮ সালে তিনি যখন খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও খাতড়ার মহকুমাশাসক সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায়, তখনই আদিবাসী-লোক শিল্পীদের উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্পের প্রসারে এই মেলার সূচনা। এলাকার মানুষের দানে ওই বছর ১ জানুয়ারী মেলা শুরু হয়।

সিপিএম নেতার দাবি, ওই মেলা কমিটিতে তৃণমূলের তৎকালীন ব্লক সভাপতি, কংগ্রেস নেতা, এলাকার ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে মেলা কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। এখন সেই কমিটিকে অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। কোনও কিছু নিয়ে মন্তব্য করার আগে মন্ত্রীর জানা বোঝা দরকার বলে তিনি দাবি করেন। সরকারী অনুষ্ঠান মঞ্চে মন্ত্রী বুলু চিক বরাইকের ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ বলা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন সিপিআইএম বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ধিক্কার জানানোর ভাষা খুঁজে পাওয়া জটিল’, একই সঙ্গে ‘লজ্জাজনক ও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

Bankura News : কনকনে ঠান্ডা জলে ২০২৪টি ডুব! অভিনব কায়দায় বর্ষবরণ বাঁকুড়ার সদানন্দের
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুভাষ সরকারও। তিনি বলেন, ‘মিথ্যে কথা বলাটা এঁদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থান করছে’। ২৪ বছর আগে প্রথম মুকুটমমণিপুর মেলা শুরুর সময় কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন? এসব অবান্তর কথা বলে মানুষকে ভুল বোঝানো যাবেনা। সরকারী অনুষ্ঠান মঞ্চে মন্ত্রীর দলীয় স্লোগান দেওয়া নিয়ে ডঃ সুভাষ সরকার বলেন, ‘শাসক দলের মন্ত্রীরা ভুলে গিয়েছে প্রশাসন আর দল পৃথক। এই ধরণের কথা বলা মানে গণতন্ত্র বিরোধী-সংবিধান বিরোধী কাজ বলে তিনি দাবি করেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version