হঠাৎ করে মনে হতে পারে কোনও রেলস্টেশন। যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রেন। ভেতরে প্রবেশ করলেই বিজা যায় গোটা স্কুলকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ট্রেনের কামরায় ন্যায়। এখানেই শেষ নয়, স্কুলের দেওয়াল জুড়ে চিত্রায়ন করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা সামাজিক, বৈজ্ঞানিক বার্তা। কথা হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলার সুধীর কুমার উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে।

ট্রেনের আদলে বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম নির্মাণে ছাত্রদের স্কুলমুখী করছে নয়াপুট সুধীর কুমার হাইস্কুল। এ যেন অসম্ভবের মাঝে সম্ভব শব্দ বন্ধকে খুঁজে নেওয়ার আনন্দ উচ্ছ্বাস। অভিভাবকরাও অনেকেই সরকারি স্কুলে পরিকাঠামো ও পঠন-পাঠনের মানের অবনমনের কারণেই শিশুদের সরকারি বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাইছে না। শিশুদের মধ্যেও সরকারি ভাঙাচোরা স্কুল পরিকাঠামোয় আনন্দদায়ক স্কুল পরিবেশের অভাবে বিদ্যালয় বিমুখতা বাডছে! কমছে সরকারি স্কুলে শিশু পডুয়ার সংখ্যা।

স্কুলছুট বাড়ছে দিন দিন সরকারি স্কুল গুলিতে। এমতাবস্থায় কাঁথি -১ ব্লকের সমুদ্র উপকূলের নয়াপুট সুধীর কুমার হাইস্কুলে ব্যতিক্রমী চিত্র। কর্তৃপক্ষ স্কুল পরিবেশকে আনন্দ দায়ক ও চিত্তাকর্ষক করে তুলছে দিন দিন। গোটা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের চারটি ভবনের প্রতিটি দেওয়ালে দেওয়ালে এমনকি সিঁড়ির প্রতিটি ধাপে আঁকা হয়েছে শিক্ষা সম্পর্কিত নানান তথ্য সম্ভার। রয়েছে ক্যাম্পাস জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক চিত্রাঙ্কন। চন্দ্রযান-৩ সহ বিভিন্ন মডেল নির্মিত হয়েছে। শিশুদের আকর্ষিত করতে রয়েছে অ্যাকোরিয়াম সহ সুসজ্জিত পার্ক।

নতুন সংযোজন আস্ত ট্রেনের আদলে বিদ্যালয় ভবন। স্কুলের পঁচাত্তর বর্ষ উদযাপনের স্মৃতিকে স্মরনীয় রাখতে এই বিদ্যালয় ভবনের নামকরণ হয়েছে ট্রেনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১৯৪৭-২০২২ নয়াপুট এসকেএইচএস প্ল্যাটিনাম এক্সপ্রেস। এই রেলগাড়ি সম বিদ্যালয় ভবনটি দেখতে ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকাবাসী অভিভাবকরাও অত্যুতসাহে ভিড় জমাচ্ছে স্কুলে।

Primary School In West Bengal : স্যুপ থেকে পিঠে, স্কুলের বেঞ্চে বুফে
পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ যুক্ত এই ভবনটির বর্দ্ধিত অংশের তিনটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় চল্লিশ লক্ষাধিক টাকা । কাঁথির সাংসদ শিশির কুমার অধিকারী সাংসদ তহবিল থেকে প্রাপ্ত ২১ লাখ ছেশট্টি হাজার টাকা ও প্রধান শিক্ষক বসন্ত কুমার ঘোড়ই-এর স্মৃতিতে প্রদত্ত দু লাখ পঞ্চাশ হাজার, প্রধান শিক্ষকের সহধর্মিনী ও কাঁথা চন্দ্রামনি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শ্রীমতি স্বপ্না রানী মণ্ডলের পিতৃদেব প্রয়াত অতুলকৃষ্ণ স্মৃতিতে প্রদত্ত এক লক্ষ পন্চাশ হাজার টাকা, তৎসহ বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল প্রায় চৌদ্দ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের গভীর নিচু জলজমি ভরাট করে এই বিদ্যালয় ভবনটি নির্মিত হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ ২০২৪ এর শুরুতে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই ভবনটি ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version