এই সময়, মালদা: বড়দিনের সন্ধ্যায় চাঁচলে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছিল বাংলা-বিহার ও ঝাড়খণ্ডের গ্যাং। বুধবার আরও দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তারের পরে এই চিত্রটাই সামনে এসেছে। চাঁচলে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে গঠিত সিট বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাশকুড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে সর্দার ওরফে জাহাঙ্গির আলম ও শেখ গুলতান নামে দুই দুষ্কৃতীকে। সর্দার ইংরেজবাজার থানার মিল্কি অঞ্চলের শ্যামপুর কলোনির বাসিন্দা।

গুলতানের বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলার বালিয়াবেলন থানার কুরুমহাট এলাকায়। এর আগে গ্রেপ্তার হয়েছিল দীপক দাস নামে এক ডাকাত, যার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার জিরওয়াবাড়ি থানা এলাকায় লোহান্ডা গ্রামে। চাঁচলে ডাকাতির ঘটনায় এই নিয়ে স্থানীয় এক লিঙ্কম্যান-সহ মোট ৪ জন গ্রেপ্তার হলো। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, আন্তঃরাজ্য ডাকাতিতে কুখ্যাত লালু সাহানির নেতৃত্বে বাংলা-বিহার-ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের নিয়ে গড়া এই ডাকাতদলের সর্দার ছিল অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এবং বাংলা টিমের মাথা। গুলতানও এই লাইনে বেশ কুখ্যাত।

এই দু’জন গ্রেপ্তার হওয়ায় মূল মাথা লালুর কাছে পৌঁছনো সহজ হবে বলে মনে করছে পুলিশ। ধৃত দু’জনকে বৃহস্পতিবার চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই দু’জনের গ্রেপ্তারি কতটা গুরুত্বপূর্ণ? পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘সর্দার শুধু চাঁচলে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনাটাতেই নয়, গত বছর ২৭ জুন মালতিপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি এবং বাধা দিতে গিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের খুনের ঘটনায় জড়িত। বিহার, ঝাড়খণ্ডেও একাধিক ডাকাতির ঘটনায় ওরা অভিযুক্ত।

ওদিকে শেখ গুলতান বোমা বাঁধার দক্ষতার জন্য কুখ্যাত এবং আন্তঃরাজ্য অপরাধে পরিচিত নাম। এদের হেফাজতে নিয়ে সিটের পরবর্তী লক্ষ্য লালু সাহানির কাছে পৌঁছনো এবং ডাকাতি হওয়া প্রায় পাঁচ কোটি টাকার গয়নার হদিশ বের করা। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বিহার ও ঝাড়খণ্ডের পুলিশকেও এদের গ্রেপ্তারি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে ভিনরাজ্যের পুলিশও এদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে।

Sonarpur Jewellery Shop Robbery : বীমার টাকা হাতাতেই ডাকাতির ছক! সোনারপুরে গয়নার দোকানের মালিকের চাঞ্চল্যকর প্ল্যান
গত ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চাঁচল শহরবাসী এক দিকে যখন কার্নিভালের অনুষ্ঠানে মেতেছিলেন, পুলিশ ব্যস্ত ছিল সেই ভিড় সামাল দিতে, তখন থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সোনার গয়নার বড় একটা শোরুমে সর্বস্ব লুট করে পালায় ৫ সদস্যের ডাকাত দল। ঘটনার জেরে জেলার ব্যবসায়ী মহল ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। এর পরেই চাঁচলে সিআইডির বিশেষ দল তদন্তে আসে। জেলা পুলিশ সিট গঠন করে।

গত ৪ জানুয়ারি দীপক দাসকে ঝাড়খন্ড থেকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়ার পরেই বেশকিছু তথ্য হাতে এসেছিল । তারপরেও এদের ধরতে সময় লাগার কারণ হিসেবে জানা যাচ্ছে, একেতো অন্তরাজ্যা গ্যাং তার উপর ধৃতরা ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে । কিন্তু প্রযুক্তি গত সাহায্য ও সোর্স ইনফর্মেশনকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত এই দুজনের সঠিক হদিস মেলে । এর পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশের সাহায্য নিয়ে এদের ধরা হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version