এই সময়, কৃষ্ণনগর: ফোনে এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার এক যুবনেত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। তাঁর নাম শ্রেষ্ঠাশ্রী সোয়াইন। তিনি দলের জেলা যুব সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। অভিযোগ, কয়েকদিন আগে কৃষ্ণনগরের এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার পরে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন ওই নেত্রী।

তিনি দাবি করেছিলেন, নদিয়া জেলায় তাঁর উপরে কেউ কথা বলেন না। মন্ত্রীও তাঁর কথা শুনে চলেন। ওই অডিয়ো ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় পরে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘অনির্বাণ দাস নামে ( যাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ) কাউকে চেনেন না। কেউ তাঁকে কালিমালিপ্ত করতে এ সব ছড়িয়েছে।’

এ ঘটনার জেরে শেষপর্যন্ত দলীয় পদ হারাতে হয়েছে ওই যুবনেত্রীকে। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি সুশান্ত মণ্ডল মঙ্গলবার বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই অডিয়োর সত্যতা মিলেছে। সাংগঠনিকভাবে আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ঘটনাটা সত্যি। এরপরেই আমাদের দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে শ্রেষ্ঠাশ্রী সোয়াইনকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে। তিনি দলের জেলা যুব সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।’

দইয়ের বাজার গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী অনির্বাণ দাস বলেন, ‘১২ জানুয়ারি সন্ধ্যার আগে একটা অজানা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। কল আসার পরে কনফারেন্স লাইনে অচেনা এক মহিলাকে যোগ করা হয়। তিনি অবশ্য নিজের পরিচয় দিয়েই কথা বলতে শুরু করেন। পরে রীতিমতো হুমকি দিতে থাকেন ফোনে। আমার ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। এই নিয়ে ক’দিন ধরে বেশ আতঙ্কে ছিলাম।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই অডিয়োতে (সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যবসায়ীকে বেশ উত্তেজিত গলায় কৈফিয়তের সুরে শ্রেষ্ঠাশ্রী জানতে চান, কেন সন্দীপ সাহার ( সিমেন্ট ব্যবসায় অনির্বাণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি) নামে কোম্পানির কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি? এতে সন্দীপ এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন যে তাঁকে এনআরএসে ভর্তি করতে হয়েছে।

তারপরেই হুমকির সুরে বলেন, কী করে আপনার ডিস্ট্রিবিউটরশিপ (সিমেন্ট ব্যবসা) থাকে সেটা দেখে নেব। নদিয়া জেলায় তাঁর উপরে কেউ কথা বলেন না। মন্ত্রীও তাঁর কথা শুনে চলেন। এরপরেই অনির্বাণকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিযুক্ত নেত্রী বলেন, ‘নদিয়া জেলা থেকে কী করে আপনার গাড়ি বের হয় দেখে নেব। চ্যালেঞ্জ করলাম। সেই ক্ষমতা আমার আছে।’

Trinamool Congress : শৃঙ্খলা ভাঙলে কড়া স্টেপ! হুঁশিয়ারি মমতা-অভিষেকের
সন্দীপের নামে অভিযোগ প্রসঙ্গে অনির্বাণ বলেন, ‘সন্দীপ সাহা সিমেন্ট কোম্পানির সেলস অফিসার পদে আছেন। তিনি আমার এলাকার দায়িত্বে থাকলেও মার্কেটিং ঠিকঠাক দেখছিলেন না বলে ব্যবসা মার খাচ্ছিল। সেই জন্য কোম্পানির সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।

কিন্তু সেটা তো একদমই আমাদের নিজেদের ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যাপার। তাতে বাইরের কেউ কেন নাক গলালেন, বুঝতে পারছিলাম না। ভয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে পারিনি। তবে ব্যক্তিগত স্তরে কয়েকজনকে ঘটনাটা জানিয়ে রেখেছিলাম।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version