এদিন সুপ্রিম কোর্ট ২৫ জানুয়ারি মামলা সংক্রান্ত হাইকোর্টের সব অর্ডারে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। অর্থাৎ ডাক্তারি পড়ুয়াদের ভর্তির ক্ষেত্রে CBI তদন্তেও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। দুই বিচারপতির নির্দেশেই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবং অরিজিনাল পিটিশনারকে নোটিশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হবে মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, কেন্দ্রীয় সরকারও হলফনামা দেবে। এই নিয়ে বক্তব্য জানাবে। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
ঘটনার সূত্রপাত কোথায়?
ডাক্তারি পড়ুয়াদের ভর্তির ক্ষেত্রে একটি ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র মামলা উঠেছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেই মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। এরপর মৌখিকভাবেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে, সেই মৌখিক স্থগিতাদেশে কোনও আমল না দিয়েই CBI তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখে FIR রুজু করতে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর বিকেলে আরও একবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য।
এরপর CBI তদন্তে লিখিত স্থগিতাদেশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি সমস্ত কথায় কথায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চের ওই নির্দেশে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ফের একবার ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। সেখানে জানানো হয়, স্থগিতাদেশ দেওয়া সত্ত্বেও CBI-কে সিঙ্গল বেঞ্চ FIR রুজু করতে বলেছে এবং নথিও হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে। এরপর সেই FIR খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে CBI-কে নথি ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। কেন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ সত্ত্বেও নথি দেওয়া হল CBI-কে? তা নিয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেলের থেকে কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়।
এদিকে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরেই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বিচারপতি সেন একটি রাজনৈতিক দলের জন্য কাজ করছেন। তাঁর সমস্ত নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের খারিজ করে দেওয়া উচিত। নির্দেশনামা এবং আবেদনপত্রের কপি ছাড়া সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধ।’
শুধু তাই নয়, কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বিচারপতি সৌমেন সেন, এই অভিযোগও তোলেন তিনি। পাশাপাশি কেন বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট পদ্ধতি শুরু করা হবে না? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় এজলাসে ছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তাঁর সঙ্গেও তপ্ত বাক্য আদানপ্রদান হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি শুনেছে। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিআর গাভাই।