এই সময়: দায়িত্ব পেয়ে বাংলায় বিজেপির সংগঠন ঢেলে সাজানোর কাজে হাত দিয়েছিলেন সুনীল বনসল। নিজের মতো করে কিছু পরিবর্তনও এনেছিলেন বঙ্গ-বিজেপির সংগঠনে। কিন্তু লোকসভা ভোটের মুখে আচমকাই সুকান্ত মজুমদারদের বিদায় জানিয়ে ‘অযোধ্যা-যাত্রা’ করেছেন তিনি। গত সপ্তাহে নিঃশব্দে এই পালাবদল ঘটে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। ২০২৪ লোকসভা ভোটে বঙ্গ-বিজেপির ‘ইনচার্জ’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মঙ্গল পাণ্ডেকে।

২০২২-এর অগস্টে উত্তরপ্রদেশ-বিজেপির দক্ষ সংগঠক সুনীল বনসলকে বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক করে পাঠান অমিত শাহরা। কিন্তু বছর দেড়েক গড়াতে না গড়াতেই বাংলা থেকে সুনীলকে তুলে নিলেন সেই শাহ-রাই। সূত্রের খবর, বনসলকে বিশেষ ‘অ্যাসাইমেন্ট’ দিয়ে অযোধ্যায় পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে রামভক্তদের অযোধ্যায় নিয়ে আসার যে কর্মসূচি বিজেপি নিয়েছে, তা সফল করার ভার বর্তেছে বনসলের উপর। ফলে বাংলায় বিজেপির সংগঠনের হাল ফেরানোর গুরুদায়িত্ব থেকে ‘মুক্তি’ মিলেছে তাঁর।

বনসলের সঙ্গেই বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডেকেও রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আপাতত তিনি-ই একা হাতে বঙ্গ-বিজেপির সংগঠন সামলাবেন। সম্প্রতি মঙ্গলের নাম এ রাজ্যে লোকসভা ভোটের ‘ইনচার্জ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সহকারী হিসেবে অবশ্য তাঁর সঙ্গে থাকবেন অমিত মালব্য এবং আশা লকরা। কিন্তু এঁদের থেকে বিজেপিতে সুনীল যে অনেক বেশি ‘ওজনদার’ ছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

লোকসভা ভোটের মুখে বনসলের মতো দক্ষ সংগঠককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরেই। রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘সংগঠনের বিষয়ে বনসলজির কিছু প্ল্যান ছিল। তিনি সেই মতো এগোচ্ছিলেন। সব থেকে বড় কথা, রাজ্য বিজেপির যুযুধান গোষ্ঠীগুলিকে এক সূত্রে গাঁথার কাজেও তিনি সম্প্রতি হাত দিয়েছিলেন। সেই সব কিছুই ভেস্তে গেল। এখন আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।’

যদিও ‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক’ দলের এই সাংগঠনিক পদটিকে নিয়ে সেভাবে আর হইচই করার পক্ষপাতী নন শাহরা। বনসলের আগে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সিদ্ধার্থ নাথ সিং-এর মতো বিজেপি নেতারা। দলের অন্দরের খবর, তাঁদের বঙ্গ-বিজেপির ‘মুখ’ হয়ে ওঠার চেষ্টা ভালোভাবে নেননি শাহরা। পর্যবেক্ষক থাকাকালীন কৈলাস-সিদ্ধার্থরা যে কোনও ইস্যুতে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতেন।

Ayodhya Ram Mandir : এখনই অযোধ্যা-যাত্রা নয় শুভেন্দু-সুকান্তদের
এমনকী, দলীয় কর্মসূচিতে রাজ্য বিজেপি নেতাদের থেকে তাঁদের কাটআউট-ই বেশি দেখা যেত। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরে গত দেড় বছরে একবারও সংবাদমাধ্যমের সামনে আসতে দেখা যায়নি বনসলকে। একই পথে হেঁটেছেন মঙ্গলও। তিনিও প্রচারবিমুখ।

বিজেপির রাজ্য কমিটির এক সদস্যর কথায়, ‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা থাকবেন পর্দার আড়ালে। এটাই বিজেপির রীতি। তাই, কে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেলেন, কে দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেলেন, সে সব নিয়ে আমরা প্রকাশ্যে আলোচনা করতে চাই না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version