এই সময়, বাঁকুড়া ও বড়জোড়া: মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনেই আতঙ্ক ছড়াল হাতি। শুক্রবার সকালে উত্তর বাঁকুড়ার বড়জোড়া রেঞ্জের খাঁড়ারি গ্রামে হাতির হানায় এক গ্রামবাসী জখম হয়েছেন বলে দাবি। গৌতম মণ্ডল নামে বছর ৫৪-র ওই চাষির দাবি, এদিন প্রাতর্ভ্রমণ সেরে বাড়ি ফেরার পথে একটি হাতি তাঁকে শুঁড়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে মাটিতে ফেলে তাঁকে কিছুটা পথ ঠেলে নিয়ে যায় হাতি।

জখম গৌতমকে উদ্ধার করে নিয়ে আনা হয় বড়জোড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘ঘটনা কী হয়েছে তা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।’

গত বছর জলপাইগুড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। তাই এবার হাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় বাড়তি সতর্ক বন দপ্তর ও জেলা প্রশাসন। তা সত্ত্বেও হাতির হামলা ঠেকানো যাচ্ছে না। এদিনের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে আহত গৌতমের বন্ধু দীপক মণ্ডল বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণে যাই। এদিন আমি যাইনি। আজ আমাকে ও ফোন করে বলে, জামবেদিয়া থেকে শীতলা যাওয়ার পথে খাঁড়ারি ফুটবল মাঠের সামনে হাতি শুঁড়ে তুলে ওকে ছুড়ে ফেলেছে। পায়ে ঠেলে ১৫ ফুটের মতো নিয়ে যায়। সম্ভবত কুয়াশার কারণে হাতিটিকে দেখতে পায়নি।’ গৌতমের বাঁ পা ও হাতে আঘাত লেগেছে বলে জানান দীপক। এদিন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শীতলা বিটের বিট অফিসার বিদ্যুৎ মাহাতো হাসপাতালে আসেন।

খাঁড়ারি গ্রাম থেকে এবার ২২ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা কবিতা মণ্ডলের মেয়ে টুম্পা এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কবিতা বলেন, ‘প্রায় দিনই হাতি গ্রামের দিকে চলে আসছে। সারাক্ষণই আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি। তবে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বন দপ্তর গাড়ির ব্যবস্থা করায় সুবিধা হয়েছে।’

Madhyamik Exam 2024 : গতবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা, হাতির হানা থেকে পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা বাঁকুড়ায়
সকালের ঘটনা কানে এলেও পরীক্ষা দিতে অসুবিধা হয়নি টুম্পার। বলে, ‘ভয় করেনি। ছোট থেকেই তো হাতির কথা শুনে বড় হয়েছি। ওরা তো প্রায় প্রতিদিনই আসে। আর কত ভয় করব?’ এদিন সকালে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কুয়াশার দাপট ছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকায় হাতিদের আনাগোনা বুঝতে অসুবিধা হয়েছে। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও জানিয়েছেন, এবার হাতিপ্রবণ এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ৬০টি গাড়ির বন্দোবস্ত করেছে জেলা প্রশাসন ও বন দপ্তর।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে উত্তর বাঁকুড়ায় ঘাঁটি গেড়েছে হাতিরা। গত মাসে বড়জোড়া রেঞ্জে হাতির হানায় এক বৃদ্ধ ও এক যুবতীর মৃত্যুও হয়। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় কার্যত হাতির ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন গ্রামবাসী। এলাকা থেকে হাতি সরানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে বন দপ্তর। কিন্তু, সরিয়ে দিলেও ফের ফিরে আসছে দলমার দামালরা।\



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version