এই সময়, দুর্গাপুর ও আসানসোল: রাজ্যে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে প্রার্থী হিসেবে প্রথম নামটি ঘোষণা করে দিল তৃণমূল। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারও তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শত্রুঘ্ন সিনহা। কলকাতায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের বৈঠকের সময়েই প্রার্থী হিসেবে শত্রুঘ্নর নাম চূড়ান্ত হয়।

শনিবার আসানসোলে রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘শুক্রবার কলকাতায় আমাদের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে তিনি আমাদের জানিয়ে দেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল থেকে শত্রুঘ্ন সিনহাকেই ফের প্রার্থী করছে দল। গত উপনির্বাচনে তিনি ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। এবার আরও বেশি ভোটে জিতবেন শত্রুঘ্ন সিনহা।’

তাঁকে যে ফের দল প্রার্থী করছে তা কলকাতার বৈঠকেই জানতে পেরেছিলেন ৭০-৮০-র দশকের বলিউডের নায়ক। এদিন দিল্লি থেকে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে আবার এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি বেঙ্গল টাইগার বলে সম্বোধন করি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওঁর নেতৃত্বে বিরোধীদের পরাজিত করে জয়ী হবে তৃণমূল।’

১৯৫২ সাল থেকে আসানসোলে ১৮ বার লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে রীতিমতো চমক দিয়ে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছিল গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে। সেবার তৃণমূলের দোলা সেনকে ৭০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারান বাবুল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ফের প্রার্থী করে বাবুলকেই। সেই ভোটে তিনি তৃণমূলের মুনমুন সেনকে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ভোটে হারিয়ে দেন। কিন্তু ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির পর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর পদ খোয়ান বাবুল।

এর পর প্রথমে দল ও পরে সাংসদ পদ ছাড়েন তিনি। শূন্যস্থান পূরণে ২০২২-এ উপনির্বাচন হলে রেকর্ড ভোটে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। উপনির্বাচনে শত্রুঘ্ন জিতেছিলেন ৩ লক্ষ ৩ হাজার ২০৯ ভোটে। তিনি হারিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পলকে। এবার আসানসোল কেন্দ্রে তৃণমূল দ্রুত প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘মোদী সরকারের গ্যারান্টি এবং দেশজুড়ে প্রচুর কাজের কারণে এবার বিজেপি যাকেই প্রার্থী করুক এই কেন্দ্রে তিনি তিন লাখেরও বেশি ভোটে জিতবেন।’ তিনি কি এবারও প্রার্থী হবেন? জবাবে অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘এটা দল ঠিক করবে। আমরা বলতে পারি না।’

Mamata Banerjee: দুর্গাপুরে শ্রমিক সংগঠন অশান্ত কেন? ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বৈঠকে জেলা নেতৃত্বকে দলনেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, শত্রুঘ্নর জয়ের মার্জিন যেন উপনির্বাচনের ফলকে ছাপিয়ে যায়। তার জন্য এখন থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে সবাইকে নিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন মমতা। উপনির্বাচনে বিপুল জয়ের নেপথ্যে ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।

শুধু এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এক লাখেরও বেশি ভোটে এগিয়েছিলেন শত্রুঘ্ন। নরেন্দ্রনাথ নিজেও উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বৈঠকে। লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। নরেন্দ্রনাথের দাবি, এবারও পাণ্ডবেশ্বর থেকে এক লাখের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন বিহারীবাবু। বলেন, ‘নেত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আশা করি, এবারের লোকসভা নির্বাচনে এক লাখেরও বেশি ভোটে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা থেকে এগিয়ে থাকবেন শত্রুঘ্ন সিনহা।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version