এদিনের বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেতে পারবেন না বলে সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে তৃণমূলের তরফে বৈঠকে যোগ দেন দুই বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় এক ঘণ্টার এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সুদীপ বলেন, ‘ভারতবর্ষের মতো এত বড় দেশে যেখানে ২৯টা রাজ্য, আটটা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, ১৪০ কোটির উপরে মানুষ—সেখানে এসব করার আগে জরুরি দলত্যাগ বিরোধী আইনকে আরও শক্তিশালী করা। কারণ, ১৯৫২ সাল থেকে যখন দেশে নির্বাচন হয়, তখন এত রাজনৈতিক দল ছিল না এবং দল ভাঙার সুযোগও ছিল না।
কিন্তু এখন যে কোনও সময়ে যে কোনও দল ভাঙিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যেতে পারে। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সচেষ্ট হওয়া দরকার।’ তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার আশঙ্কা, ‘এক দেশ, এক ভোটের মাধ্যমে দেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই তৃণমূল একে সমর্থন করে না।’ কল্যাণের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের ভাবনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর উপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। সরকারের খরচ বাঁচাতে কি জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের সঙ্গে আপস করা হবে?’
আবার সিপিএমের তরফে বৈঠকে যোগ দিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি তৃণমূলের সুরেই বলেন, ‘এক দেশ এক নির্বাচন অ-গণতান্ত্রিক এবং আমাদের সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। এই নীতি আনতে গেলে অন্তত সংবিধানের চারটি ধারার পরিবর্তন করতে হবে।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘আপনাদের (সরকারের) হাতে যখন ক্ষমতা রয়েছে একটা রাজ্যের পতন ঘটানোর, তাহলে একসঙ্গে নির্বাচনের অর্থ কী?’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুদীপের দাবি, ‘এদিনের বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা শোনার পর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ জানিয়েছেন সেগুলো সত্যিই প্রশংসনীয়।’ সূত্রের দাবি, এদিন রামনাথ কোবিন্দ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি যে চিঠি লিখেছেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উনি বাজেটের জন্য আসতে পারবেন না আগেই জানিয়েছিলেন। তবে আমরা খুব খুশি, আপনারা বেশ কিছু নতুন বিষয় আমাদের সামনে উন্মোচন করলেন। আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে আপনাদের দেওয়া পরামর্শ বিবেচনা করব।’