গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের আগে দলে কর্মিসংখ্যা বাড়াতে ওই ‘অজানা সদস্য’দের খুব প্রয়োজন এবং সে জন্যই পিছনে ফিরে তাকানোর এই তৎপরতা। বিজেপি সূত্রের খবর, দলীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে যাঁরা বিজেপির সদস্য হতে চেয়ে টোল ফ্রি নম্বরে মিস্ড কল দিয়েছিলেন, তাঁদের খুঁজে বার করে দলে সক্রিয় করে তোলা হবে। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটের আগে যাঁরা মিস্ড কল দিয়েছিলেন, তাড়াহুড়োয় তাঁদের সবার সঙ্গে তখন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়া, ২০০-র বেশি আসন পাওয়ার কথা প্রচার করে আখেরে সত্তরের গণ্ডি টপকাতে না-পারায় হতাশ হওয়ার কারণেই সম্ভবত রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ভোটের পর আর সেই নতুন সদস্যদের কাছে পৌঁছনোর তাগিদ বোধ করেননি। কিন্তু এখন, লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বে সেই মিস্ড কল দিয়ে সদস্য হতে চাওয়াদের খোঁজে পদ্ম যেন চিরুনি তল্লাশি শুরু করতে চলেছে।
রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘মিস্ড কল দিয়ে আমাদের পার্টিতে বহু মানুষ সদস্য হয়েছেন। তাঁরা অনেকেই এখন দলের সক্রিয় কর্মী। কিন্তু এমনও অনেকে আছেন, যাঁদের কাছে আমরা পৌঁছতে পারিনি। আবার তাঁরাও মিস্ড কল দেওয়ার পর আর সে ভাবে বিজেপির ঝান্ডা হাতে রাস্তায় নামতে উদ্যোগী হননি। সেই মানুষগুলোকেই আমরা খুঁজে বার করতে চাইছি।’
লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে বিজেপি ‘গ্রাম চলো’ অভিযান শুরু করতে চলেছে। দলীয় সংগঠনকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়াই এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ, রাজ্য এবং জেলা স্তরের বিজেপি নেতারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা করবেন। গ্রামে গিয়ে তাঁদের কী কী করতে হবে, সেটাও ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। যেমন, কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য আর রাজ্য সরকারের দুর্নীতির কথা প্রচার করতে হবে। এরই পাশাপাশি চলবে মিস্ড কল দিয়ে বিজেপির সদস্য হতে ইচ্ছুকদের খুঁজে বার করা।
কিন্তু বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন, এতদিনে কি তাঁদের মনের পরিবর্তন হয়নি? ২০২১-এর প্রাক-বিধানসভা ভোটের পরিস্থিতির তুলনায় এই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে। সে ক্ষেত্রে এখনও কি তাঁরা বিজেপির সক্রিয় কর্মী হতে চান? গত এক বছরে তাঁদের কেউ কেউ মোবাইল নম্বরই পাল্টে ফেলেননি তো?
বঙ্গ-বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ‘যাঁরা তখন মিস্ড কল দিয়ে বিজেপির সদস্য হয়েছিলেন, তাঁরা তো দলে সক্রিয় আছেনই, বরং আরও অনেকে পার্টির সদস্য হতে চাইছেন। অনেকেই খোঁজ করছেন, কী ভাবে বিজেপির সদস্য হওয়া যায়।’