কলকাতা শহরকে জনপ্রিয় তিব্বতি খাবারের স্বাদ চেনাল কারা? একবাক্যে অনেকেই বলবেন চৌরঙ্গী একফালি দোকান ‘টিবেটিয়ান ডিলাইট।’ মোমো, থুকপা ছাড়াও আরও বহু রকমের প্রতিবেশী দেশের খাবারের ওয়ান স্টপ সলিউশন ছিল কলকাতার এই প্রাচীন রেস্তরাঁ। ছিল বলার কারণ, তিলোত্তমার এই প্রাচীন খানাপিনার ঠেক এবার বন্ধের পথে।

বন্ধের কারণ হল, আকাশছোঁয়া চিমনি প্রয়োজন ওই দোকানের। কড়া নোটিশ এসেছে পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের। না, হলে রেস্তরাঁয় এবার তালা ঝোলাতে হবে। পুরনো কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই তিব্বতি খাবারের দোকানের এবার তাই ইতি টানার পালা।

সালটা ১৯৮১। জিৎবাদল মুখিয়া এবং তাঁর পুত্র উদয় মুখুয়ার হাত ধরে শুরু হয় ৬৬/১ চৌরঙ্গী রোডের এই দোকান। তাঁদের পরিবার ছিল দার্জিলিঙের বাসিন্দা। তবে পরবর্তী প্রজন্মের বড় হয়ে ওঠা এই শহরেই। একটি মুখরোচক খাবারের দোকানের জনরপ্রিয়তা পরিবারের সকলকেই এই শহরের চিরস্থায়ী বাসিন্দা করে তোলে। কলেজ পড়ুয়া থেকে বিদেশি খাবার প্রেমীদের অনর্গল সুস্বাদু তিব্বতি খানার স্বাদ মিটিয়ে এসেছেন তাঁরা।

তবে বাধ সাধল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের কিছু কড়া নিয়মকানুন। গত ২৭ জানুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান হয়, রেস্তরাঁর কিচেনের চিমনি করতে হবে পার্শ্ববর্তী বহুতলের উচ্চতার থেকে বেশি। যাতে কালো ধোঁয়া দূষণ না ছড়ায়। বহুতল আবাসনগুলোর থেকে ৩.৫ মিটার উঁচুতে এই চিমনি নির্মাণ করতে হবে। ইতিমধ্যে এই রেস্তরাঁর জল এবং বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে।

পয়লা বৈশাখে নতুন আউটলেট খুলছে দাদা বৌদি, 6তলা বিল্ডিংয়ে মিলবে বিরিয়ানির স্বাদ
চিমনি বাড়ানোর জন্য ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতে হবে, কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় বিদুৎটুকু পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। গত কয়েকদিন অসংখ্য ক্রেতারা এসে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু ধোঁয়া ওঠা চিলি পর্ক, মোমো, থুকপার এই প্রাচীন ঠিকানা কি এবার স্মৃতির পাতায় নাম লেখাবে? রেস্তরাঁর দায়িত্বে বর্তমানে জিৎবাদল মুখিয়ার পুত্রবধূ নিমা মুখিয়া। তিনি জানিয়েছেন, পুরসভা এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের দাবি তাঁরা মেনে নিচ্ছেন। এর আগেও চিমনির উচ্চতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা হয়েছিল। তবে এবার আরও একবার নতুন বিজ্ঞপ্তি পেয়ে কার্যত দিশেহারা তাঁরা। এমনকি, জায়গাটির মালিক, প্রোমোটাররাও দোকান উঠিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন বাধা পেরিয়ে আবার কি দোকান খুলবে? অপেক্ষায় তিলোত্তমা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version