গোটা বাংলাজুড়ে নানান মেলা আয়োজিত হয়। বিশেষত এলাকাগতভাবেও আয়োজিত হয় বিভিন্ন মেলা। তেমনই একটি হল সিম ভর্তার মেলা। এই মেলায় এলে আপনাকে সিম আলু ভর্তা করে খেতেই হবে। একদিন নয়, দু’দিন নয়, হাওড়ার সাঁকরাইল বড় পীরতলা এলাকায় প্রায় আড়াইশো থেকে তিনশো বছর ধরে চলে আসছে এই মেলার রীতি।

জানা গিয়েছে, প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম তারিখ থেকে শুরু হয় এই মেলা। গোটা মাস ধরেই মেলা চলে। সপ্তাহে ২ দিন এই মেলা বসে। মেলাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে মাঘ মাসের প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শনিবার। এই মেলায় আপনি পাবেন বাচ্চাদের খেলনা থেকে শুরু করে নানান ধরনের খাবারের দোকান। হাওড়ার সহ বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ নিজেদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে এখানে ঘুরতে আসেন। এখানকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সিম,আলু ভর্তা এবং গরম গরম সাদা ভাত রান্না করে সকলে মিলে দুপুরের আহার সারেন।

কলকাতা থেকে ঘণ্টা দেড়েকের পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই মেলায়। প্রাচীন অথচ নিখাদ গ্রাম্য এক পরিবেশ উপভোগ করা যায় সাঁকরাইলের বড় পীরতলার এই মেলায় এলে। এলাকার প্রবীণরা জানাচ্ছেন, আড়াইশো থেকে তিনশো বছর আগে মাঘ মাসে শিম আলু ভর্তার এই মেলা শুরু হয়। বিষয়টা খানিকটা চড়ুইভাতি গোছের হলেও আশলে এটি একটি মেলাই। এম বহু মানুষ আছেন, যাঁরা যাঁরা বছর বছর এই মেলায় অংশ নেন। শুধুমাত্র ভর্তার টানে ভিড় জমান মানুষ।

মেলার প্রসঙ্গে এক বিক্রেতা জানান, তিনি বছর ধরে এই মেলায় আসছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, সারা বছর তাঁরা মাঘ মাসের এই মেলার জন্যই অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ এই মেলাই হয়ে ওঠে তাঁদের কাছে এক মিলন ক্ষেত্র। এমনকী বিভিন্ন পরিবারের যে সমস্ত সদস্যরা বাইরে থাকেন, তাঁদের অনেকেই এই সময় বাড়ি ফিরে আসেন। এককথায় বলতে গেলে উৎসবের মেজাজে কাটে গোটা মাস। যদিও স্থানীয়দের অনেকেরই আক্ষেপ, প্রচারের আলো অভাব নেই। বলতে গেলে স্থানীয়দের আবেগের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে শিম আলুর ভর্তার এই মেলা। বহু দূর দূরান্ত থেকে প্রতিবছরই মানুষের ভিড় হয় এই মেলায়, এই বছরও তাতে কোনও ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version