এই সময়, শান্তিনিকেতন: বিশ্বভারতীর প্রাণকেন্দ্র উপাসনাগৃহ থেকে ছাতিমতলা-রবীন্দ্র ভবনের সামনে টোটো-চার চাকা গাড়ির দৌরাত্ম্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দূষণের জেরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা হারানোর আশঙ্কায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে সম্প্রতি জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছে আশ্রমিক সঙ্ঘ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।আসলে আশ্রমের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই তিন কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে পূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এই রাস্তার দু’দিকে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ভবন, স্থাপত্য-ভাস্কর্য৷ এই রাস্তাটি তৎকালীন উপাচার্য স্বপন দত্তের আবেদনের ভিত্তিতে বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে পৌঁছালে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে এসে রাস্তাটি ফিরিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী।

তার পরে এই রাস্তায় একাধিক টোটো ও গাড়ির স্ট্যান্ড গজিয়ে উঠেছে। দূষণ থেকে ঐতিহ্য বাঁচাতে ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি ফিরিয়ে দিতে এর আগে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করে বিশ্বভারতী। কিন্তু তখন চরম আপত্তি তুলেছিল আশ্রমিক সঙ্ঘ। এবার ঐতিহ্য বাঁচাতে বীরভূমের জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে ওই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ সমেত একাধিক দাবি জানিয়েছে তারা। এই দাবির ফলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পূর্বের দাবিতেই কার্যত শিলমোহর দিল দুই প্রতিষ্ঠান।

আশ্রমিক, প্রাক্তনী থেকে শান্তিনিকেতনবাসীর দাবি, শান্তিনিকেতন থানা ও বোলপুর পুরসভার উদাসিনতায় আশ্রমের পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে দিনে দিনে৷ এই নিয়ে সম্প্রতি বীরভূমের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে চিঠি দেয় শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক সঙ্ঘ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। শতাব্দী প্রাচীন দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে রাস্তা ফেরানোর দাবি জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ট‍্যাগ শেষপর্যন্ত বিশ্বভারতী ধরে রাখতে পারবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আশ্রমিক সঙ্ঘ। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছে, হেরিটেজ সাইট এলাকায় শান্তিনিকেতন ক্লাব মোড়ের কাছে হাইট বার আছে। অনেক গাড়ি এটা জানে না। এমনকী, পণ্যবাহী ভাড়া গাড়ি তা মানেও না। তাই জেলা প্রশাসনকে হেরিটেজ সাইটে নোটিস লাগিয়ে সতর্ক করতে বলা হয়েছে।

যান নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি, কোনও কোনও জায়গায় রুট ডাইভার্সন করতেও বলা হয়েছে। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘রাস্তায় যানজট, দূষণ বেড়ে চলেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট স্বীকৃতি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version