তাপস প্রামাণিক

পশ্চিমবঙ্গের নতুন ভোটার তালিকায় প্রায় ৮ লক্ষ ভুয়ো ভোটার রয়েছে বলে বিজেপি’র তরফে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা নস্যাৎ করে দিল কমিশন। বিজেপি’র অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়ো ভোটার খুঁজতে প্রতিটি জেলা থেকে আলাদা করে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে কমিশন। সেই মতো সিইও অফিস থেকে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে।তাতেই দেখা যাচ্ছে, বিজেপি’র তরফে ভুয়ো ভোটারের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। ফলে এ নিয়ে আর নতুন করে মাথা ঘামাতে নারাজ কমিশনের কর্তারা। সম্প্রতি বিজেপি’র পক্ষ থেকে মোট ১৬ লক্ষ ৯১ হাজার ১৩২ জনের একটি লম্বা তালিকা জমা দেওয়া হয় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে।

সেই তালিকা পেশ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, সংশোধিত ভোটার তালিকায় অনেক ভুয়ো ভোটারের নাম রয়েছে। তার প্রমাণ হিসাবে বেশ কিছু ডকুমেন্ট পেশ করেছিলেন তিনি। সেই অভিযোগ শুনে অনেকে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, অনেক ঝাড়াই বাছাইয়ের পরে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল কমিশন।

তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় চিন্তায় পড়েছিলেন কমিশনের কর্তারা। ভোটার তালিকা তৈরি হয় কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। তাতে কোনও গলদ থাকলে তা কমিশনের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখা হয়। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিজেপি’র যাবতীয় অভিযোগ সোজা পাঠিয়ে দেওয়া হয় দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় প্রায় ৮ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের নাম রয়েছে শুনে হকচকিয়ে যান কমিশনের কর্তারাও।

এ নিয়ে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্য অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সিইও অফিসকে নির্দেশ দেয় কমিশন। এই ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সিইও দপ্তরে আলাদা কমপ্লেন সেল রয়েছে। তারা তড়িঘড়ি করে তদন্ত নামে। ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসারদেরও সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলা হয়। সেখান থেকেই আসল সত্য বেরিয়ে আসে।

সিইও অফিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘বিজেপি’র পক্ষ থেকে ভুয়ো ভোটারের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে থেকে বেশ কিছুজনের সম্পর্কে আমরা বিশদে খোঁজখবর নিই। তাতে দেখা গিয়েছে, ভোটার তালিকায় একই নামে একাধিক ব্যক্তি থাকলেও তাঁরা প্রত্যেকেই বৈধ ভোটার। অনেক সময় ভোটারদের নাম এবং বাবার নাম হুবহু মিলে যায়। তা দেখে অনেকে সন্দেহ করেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে অনেক কমন নাম পাওয়া যায়। সেটা দেখে অনেক সময় বিভ্রান্তি ছড়ায়।’

বিজেপির অভিযোগ নিয়ে এদিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘টেলিফোন ডিরেক্টরি খুললেও একই নামের একাধিক ব্যক্তির সন্ধান মিলবে। ভোটার তালিকায় একই নামের একাধিক লোক থাকতেই পারেন। তার মানে এই নয় যে, তাঁরা সকলে ভুয়ো ভোটার। এসব বিজেপি’র ফাঁকা বুলি।’

Lok Sabha Election 2024: লোকসভা ভোটে ভোটার পিছু কত টাকা খরচ হয়? জানুন নির্বাচন কমিশনের ‘হাঁড়ির খবর’

বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া বলেন, ‘আমরা শুধু ভুয়ো ভোটারের নাম দিইনি, কোন কোন বুথে এবং কোন কোন বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁদের নাম রয়েছে সেই তথ্য দিয়েছি। অনেকের নাম, বাবার নাম আর বয়স মিলে গিয়েছে। ১১৪৮৭ জনের এপিক নম্বর পর্যন্ত এক। আমাদের হিসেবে সেটা ডুপ্লিকেট। একই এপিক নম্বরে দু’জন ভোটার কীভাবে হতে পারে?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version