এই সময়, ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবারে চিকিৎসক কল্যাণাশিস ঘোষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার দু’সপ্তাহের মাথায় বৃহস্পতিবার তদন্তভার হাতে নিল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি। বৃহস্পতিবার বেলায় সিআইডির দুই অফিসার ডায়মন্ড হারবার থানায় এসে তদন্ত প্রক্রিয়া বুঝে নেন।কেস ডায়েরির পাশাপাশি চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকার বেশ কিছু তথ্য ও নথি পুলিশের কাছ থেকে নিয়েছেন সিআইডি অফিসার। এর পর ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতেও তদন্তভার হস্তান্তরের বিষয়টি সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর পর চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ডায়মন্ড হারবার থানার তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে কথা বলেন সিআইডি ইনস্পেক্টর শিবেন্দু ঘোষ।

গত ৩ মার্চ গভীর রাতে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোয়ার্টার থেকে চিকিৎসক কল্যাণাশিস ঘোষের (৪৫) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা চিকিৎসকের মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০৬, ৩৮৬, ৪০৬, ১২০বি ও ৩৪ ধারায় মামলা করে ঘটনার তদন্তে নামে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার করা হয় চিকিৎসকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া মহিলা রিয়া দাস ও তার স্বামী অভিজিৎ দাসকে। তার পর ধরা পড়েন অভিজিৎ ও রিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল বাকিবিল্লা বোরহানিকে। ধৃত অভিজিৎ দাসকে ১০ দিন, রিয়া দাসকে ৯ দিন ও বাকিবিল্লা বোরহানিকে ৮ দিনের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ।

আজ, শুক্রবার ধৃতদের ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। অভিযোগকারী আইনজীবী মানস দাস জানান, ‘চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তভার হাতে নিয়েছে সিআইডি। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে। এখনও পর্যন্ত এফআইআরে নাম থাকা এক মহিলা সাব ইনস্পেক্টর-সহ তিনজন ধরা পড়েনি। সিআইডি তদন্ত চালিয়ে নিশ্চয়ই বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করবে।’

পুলিশ সূত্রের খবর, চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হলেও ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের নাম এফআইআরে রয়েছে। মহেশতলা এলাকার বাসিন্দা পুলিশের ওই মহিলা অফিসার দু’দফায় দীর্ঘদিন ডায়মন্ড হারবারে কর্মরত ছিলেন।
মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের ডাক পড়েনি, জোর বিতর্ক ডায়মন্ড হারবারে

ফলে জেলা পুলিশ মহলে তাঁর প্রভাব থাকায় তদন্তের অগ্রগতিতে ব্যাঘাত ঘটছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন মৃত চিকিৎসকের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বিরোধী বিজেপি এবং আইএসএফ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ওই মহিলা এসআই শাসকদলের এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আড়াল করা হচ্ছিল।

বিরোধীদের অভিযোগ, সিআইডি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে গোটা ঘটনা ভোটের প্রচারে মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে। যদিও তৃণমূল নেতা অরুময় গায়েন বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে একজন পুলিশকর্মী রয়েছে। আসল ঘটনা সামনে আনতে তদন্ত সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version