সেখানে মসলিনের টানে বিদেশি, প্রবাসী বাঙালিদের আনাগোনা বেড়েছে। মসলিনের উপর গবেষণা করতে সেখানে আনাগোনা রয়েছে ভারতীয় ও বিদেশি ছাত্রদেরও। উৎফুল্ল রাজীব দেবনাথ বলেন, ‘শেষপর্যন্ত আমরা মসলিনে জিআই ট্যাগ পেলাম। এরজন্য দীর্ঘদিন লড়াই করেছি। বাংলাই যে মসলিনের জন্মস্থান তা জিআই তকমা মেলায় প্রমাণ হয়ে গেল। এবার ব্যবসাতেও বাড়তি সুবিধা মিলবে।’
রাজীব দেবনাথ আরও বলেন, ‘একটি মসলিনের শাড়ির যা দাম তার মধ্যে কারিগরের মজুরি বেশ খানিকটা। এক লক্ষ টাকার একটি শাড়িতে কারিগরের মজুরি ৭৫ হাজার টাকার মতো। বুনতে সময় লাগে প্রায় পাঁচ মাস। শাড়ি বোনার ক্ষেত্রে কারিগরের যেমন ভূমিকা, তেমন আবহাওয়ার একটা বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। তাই বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকে।
টানা সুতো এতটাই শক্ত থাকে যে যখনই বুনতে শুরু করবে তখনই সুতো ফেটে যাবে। আমাদের বাতাসে জলীয় বাষ্পা থাকার কারণে সুতো নরম থাকে। তাই সেই সমস্যা হয় না। রাজস্থান বা গুজরাটে মসলিনের কাজ সহজে হবে না। জাপানের ৬টি কোম্পানিতে আমাদের মসলিনের সামগ্রী যায়। রিলায়েন্স, টাটাদের সঙ্গেও অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে। যারা মাস্টার কারিগর তাঁরা মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা রোজগার করেন।
সাধারণ শিল্পীও ১৫ হাজার টাকার মতো আয় করেন। ৩৫০ কাউন্টের সুতো দিয়ে ৩টি শাড়ি বানিয়েছি। যার প্রতিটার দাম ১৫ লক্ষ টাকা করে। দু’টি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাংলার মসলিন জিআই ট্যাগ পাওয়ায় শাড়ির চাহিদা বাড়বে। তাতে অনেকের কর্মসংস্থানও হবে।’
সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুরেশ বসাক বলেন, সূক্ষ্ম মসলিন হ্যান্ডলুমেই বুনতে হয়। মসলিনের হাত ধরে হ্যান্ডলুমেরও ঘুরে দাঁড়ানোর যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে। এতদিন হালকা রংয়ের মসলিন বোনা হতো। এবার গাঢ় রংয়ের দিকে এগোচ্ছি। তবে মসলিনের ডেভলপমেন্টের দিকে সরকারকে আরও নজর দিতে হবে।’