ভোটে দাঁড়ালে কার হয়ে দাঁড়ানো উচিত? আদৌ কি প্রার্থী হওয়া উচিত তাঁর? নিজের ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মত জেনেই সিদ্ধান্ত নিতে চান দক্ষিণ দমদমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলার দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে ফুচু।একদলের টিকিটে জিতে রাতারাতি দলবদলই যেখানে ট্রেন্ড, সেখানে দেবাশিস খানিকটা উল্টো পথেই হাঁটছেন। ২০১৫ সালের পুরভোটে তৃণমূলের টিকিটে জিতে কাউন্সিলার হন দেবাশিস। কিন্তু ২০২১-এর পুরভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। কিন্তু নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েই তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে কাউন্সিলার হন এলাকার ‘ফুচুদা’।

এবার লোকসভা ভোটের দামামা বাজতেই কর্মিসভা থেকে দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় দলে ফেরার আহ্বান জানান দেবাশিসকে। যদিও মঞ্চে উঠে একেবারে শেষ মুহূর্তে দেবাশিস জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে এখনই তৃণমূলে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা, বাসিন্দারা তাঁকে নির্দল হিসেবেই জিতিয়েছেন। তাই সেই বাসিন্দাদের মত নিয়েই এগোতে চান তিনি।

অতএব ভোটের আগে ‘ভোটে’র আয়োজন। এ প্রসঙ্গে সোমবার রাতে সৌগতর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তরফে ওঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। হয়তো কোনও কারণে না করেছেন। উনি যদি ফের দলের আসার আবেদন করেন তা হলে তা অবশ্যই বিবেচনা করে দেখা হবে।’

এদিকে গণভোটের প্রস্তুতি সারা। ১৫ নম্বরে ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে দু’পাতার লিফলেট কাম ভোটার স্লিপ বিলি শুরু করেছেন ফুচুর অনুগামীরা। প্রথম পাতায় রয়েছে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের কর্মকাণ্ড এবং সেখান থেকে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। পরের পাতায় রয়েছে ‘ভোটার স্লিপ’ তথা প্রশ্নাবলি।

তাতে রয়েছে তাঁর কোন দলের হয়ে দাঁড়ানো উচিত, নির্দল থাকা উচিত কি না, এমনকী রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিত কি না— সে সব প্রশ্ন। ভোটার স্লিপে পছন্দের নির্দিষ্ট জায়গায় টিক দেওয়ার পাশাপাশি মতামতের নেপথ্যে কারণ লেখারও আর্জি জানিয়েছেন ওই নির্দল কাউন্সিলার।

West Bengal BJP : দলীয় প্রার্থীর ‘পথের কাঁটা’ BJP বিধায়কই, দার্জিলিঙে ‘সরাসরি চ্যালেঞ্জ’-এর মুখে রাজু বিস্তা?

দেবাশিসের বক্তব্য, ‘মানুষ আমাকে নির্দল হিসেবেই জিতিয়েছেন। তাই কোনও রাজনৈতিক দলে যাওয়া উচিত কি না, সে ব্যাপারে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মতামত চেয়ে একজন জনপ্রতিনিধির উপযুক্ত কাজ বলে আমি মনে করি। ওই প্রশ্নগুলির উত্তর লিখে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এবং রাস্তার মোড়ে অন্তত ১০টি বক্সে ফেলতে অনুরোধ করা হয়েছে বাসিন্দাদের। ১০ এপ্রিল সেই বাক্সে বাসিন্দাদের দেওয়া রায় যে দিকে যাবে, সে পথেই হাঁটব।’

দেবাশিসের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এলাকার শিক্ষক সমীর চৌধুরী মনে করেন, ‘এটা একদিকে গিমিক হলেও সকাল-বিকেল দলবদলু সংস্কৃতিতে কিছুটা উল্টো হাওয়া তো বটেই। উনি একজন কাউন্সিলার হিসেবে এলাকায় কতটা কাজ করেছেন, সেটা তো একটা প্রশ্ন বটেই। কিন্তু তারচেয়েও বড় কথা, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উনি অন্তত ভোটারদের ন্যূনতম সম্মানটা দিয়েছেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version