এই সময়: পাহাড়-ভূমে তীর্থে গিয়ে মূর্ছা যাওয়া একযাত্রীর জাত বিচারে ভার পড়েছিল এক ব্যক্তির উপরে। জবাবে তিনি বলেছিলেন ‘ওর নাড়ি টিপে দেখ, যদি মাছ-ভাতের দপদপানি পাও, তা হলে বুঝবে বাঙালি। তা হলে ওঁকে আর আমাদের তাঁবুতে নেওয়া যাবে না।’ গল্পে হোক বা বাস্তবে, স্বদেশে হোক বা বিদেশে— মাছ-ভাতের সঙ্গে বাঙালির নাড়ির যোগ।তবে এত দিন তা ভোটের ইস্যু হয়নি। কিন্তু এবার হতে চলেছে। তৃণমূল আনছে স্লোগান— ‘মাছ-ভাত খাও, বিজেপি তাড়াও।’ সৌজন্যে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিদান— নবরাত্রিতে কেউ আমিষ খায় নাকি! প্রচারে তৃণমূলের হাতিয়ার খাদ্যের প্রাচীন প্রবাদ— ‘আপ রুচি খানা।’

তৃণমূলের ভোট ইস্তেহারেও তা ঠাঁই পেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে ইস্তেহারে তৃণমূলের এবারের চমক, বাংলা-হিন্দি-ইংরাজির পাশাপাশি নেপালি, সাঁওতালি এবং উর্দুতেও তা প্রকাশিত হবে। সম্ভবত এই প্রথম কেউ এই তিন ভাষায় পৃথক ইস্তেহার প্রকাশ করতে চলেছে। দলীয় সূত্রে খবর, আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হতে পারে তৃণমূলের সেই ইস্তেহার।

নবরাত্রির সময়ে বিরোধী শিবিরের নেতাদের আমিষ ভোজন নিয়ে দিনকয়েক আগেই বক্রোক্তি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের পোস্ট করা আমিষ খাওয়ার একটি ভিডিয়োর তীব্র সমালোচনা করেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। একধাপ এগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘ওঁদের মানসিকতা মুঘল শাসকদের মতো।’ এর পরেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয় গোটা বিরোধী শিবির৷

প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি আমজনতার খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করছে, আমিষ ভোজনে আপত্তি জানাচ্ছে, এই অভিযোগে সোচ্চার হন তৃণমূল নেতৃত্বও। সম্প্রতি কোচবিহারের প্রচারসভায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘বিজেপি জিতলে আপনাদের মাছ খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।’ দলীয় সূত্রের খবর, জেলায় জেলায় বিভিন্ন প্রচারসভায় লাঞ্চের ব্যবস্থা করবে তৃণমূল। সেখানে পেটপুরে মাছ-ভাতের ব্যবস্থা থাকবে।

‘মৎস্য মারিব, খাইব সুখে’র দিনে ইতি টানবে বিজেপি?

অভিন্ন দেওয়ানিবিধি থেকে শুরু করে সিএএ, এক দেশ-এক ভোট নীতির বিরোধিতার কথাও সম্ভবত ঠাঁই পাচ্ছে তৃণমূলের ইস্তেহারে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার নিয়ে দলের সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। মহিলাদের সার্বিক উন্নয়ন ও বিকাশ প্রকল্পে গত ১৩ বছরে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে কী কী পদক্ষেপ করেছে, তার উল্লেখের পাশাপাশি আগামী দিনে নতুন কী প্রকল্প আনা হবে, তারও উল্লেখ থাকছে ইস্তেহারে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version