‘OMR শিটেও নম্বর জ্বলজ্বল করছে। কোন ভিত্তিতে আমরা অযোগ্য?’ কান্না জড়ানো গলায় কথাগুলো বলছিলেন অশোকনগরের স্বর্ণালী চক্রবর্তী। গ্রীষ্মের ছুটিতে দৈনন্দিন রুটিনটা একটু বদলেছিল। কিন্তু, ছুটির মধ্যেই জীবনটাই বদলে যাবে, ভাবতে পারেননি তিনি।কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যাঁদের চাকরি গিয়েছে তাঁদের মধ্যে নাম ছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কলশুর হাই স্কুলের এই শিক্ষিকার। রায়শুনে সোমবার চোখে জল এসেছিল স্বর্ণালীর। কিন্তু, মঙ্গলবার থেকেই তাঁর কণ্ঠে লড়াইয়ের সুর। এই সময় ডিজিটাল-কে ফোনে আফসোস-ক্ষোভ-রাগ মেশানো গলায় বললেন, ‘একজন নামজাদা আইনজীবী বলে গেলেন যোগ্যরা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করুক। SSC OMR শিটে প্রাপ্ত নম্বর জানিয়ে দিয়েছে। ফাঁকা খাতা জমা দিইনি আমি। আমাদের বলে দিন, যোগ্যতা প্রমাণ করতে গেলে কী কী করতে হবে?’

স্বর্ণালী এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ‘২০১৬ সালের SLST-তে নবম-দশমে আমরা চাকরি পেয়েছিলাম। আমার র‍্যাঙ্ক ছিল ৪১। আমরা ফর্ম ফিলাপ করে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তারপর আমাদের নথি ভেরিফিকেশন হয়েছিল। চাকরির ইন্টারভিউ হয়, কাউন্সেলিং হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমরা নিয়োগপত্র হাতে পাই। আমরা এর বাইরে কিছু জানি না। আমাকে যদি চাকরির পরীক্ষায় পাশ করার পর নিয়োগ দেওয়া হয়, আমি কি দেখতে যাব যে ভেতরে কী কী দুর্নীতি হয়েছে?’

তাঁর সংযোজন, ‘বিষয়টা কিছুটা এই রকম নয় কী যে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে, ২ জন টুকলি করেছে। কিন্তু, হলে থাকা ৪০ জনের পরীক্ষাই বাতিল করে দেওয়া হল। আমাদের কাছে তো OMR-এর নম্বরটাও রয়েছে। আমার OMR অনুযায়ী আমি ৫১ পেয়েছি। আমার অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৫। আমার ইন্টারভিউ স্কোর ৬.৫৩। যে OMR-এর ভিত্তিতে পাঁচ হাজার জনকে অযোগ্য বলা হচ্ছে তাহলে সেই ভিত্তিতেই আমরা যোগ্য! তাহলে আমাদের চাকরিটা কেন গেল?’

SSC Recruitment Scam : ‘যোগ্য লোকেদের চাকরি যেতে পারে না’, আইনি পরামর্শের ভাবনা

স্বর্ণালীর আক্ষেপ, ‘কে টাকা দিয়েছে দিদি জানি না! আমার বাড়িতে প্রবীণ শ্বশুর-শাশুড়ি, মা রয়েছেন। বাবা নেই, তাঁর চিকিৎসার জন্য লোন নিয়েছিলাম। এবার বলুন কী ভাবে চলব?’

SSC Recruitment Scam : ঠগ বাছতে চাকরি উজাড়! এবার পথে চাকরিহারা যোগ্যরা

সোমা দাসের প্রসঙ্গ টেনে এই শিক্ষার মন্তব্য, ‘একজন জনৈক আইনজীবী বলেছেন সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকাটা অত্যন্ত মানবিক সিদ্ধান্ত। আমিও খুব খুশি যে তাঁর চাকরি রয়েছে। তবে একটা প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে, তবে কি তাঁদের সহানুভূতি পেতে ক্যান্সার আক্রান্ত হতে হবে?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version