এই সময়: বাংলায় ভোট মানেই হিংসা—এই অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে বারবার তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। লোকসভা ভোট হোক বা পঞ্চায়েত নির্বাচন—যে কোনও ভোটেই পশ্চিমবঙ্গে হিংসার ইতিহাস রয়েছে। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে হিংসার ঘটনায় তো সব মামলায় নজিরবিহীনভাবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২৪-এ কি বাংলার সেই বদনাম ঘুচতে চলেছে?প্রথম তিনটি দফার ভোট নির্বিঘ্নে শেষ হওয়ায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। এ রাজ্যে যাঁরা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই সাফল্যের জন্য তাঁদেরকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি পুরো ভোটটাই যাতে শান্তিতে শেষ হয়, তার জন্য কমিশন সংশ্লিষ্ট সব আধিকারিককে পুরোদমে ঝাঁপিয়ে পড়তেও বলেছে।

কমিশনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রথম তিনটি দফায় বাংলায় সে অর্থে বড়সড় কোনও গোলমালই হয়নি। কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে বুথ দখল, রিগিংয়ের বড় কোনও অভিযোগ ওঠেনি। কমিশনের দাবি, প্রথম দফার ভোটে কোচবিহারে কিছু বিক্ষিপ্ত গোলমাল হলেও ভোটকেন্দ্রে তার কোনও আঁচ পড়েনি। দ্বিতীয় দফাতেও ভোট ছিল পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।

মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় ভোট নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় ছিল কমিশন। এই দফায় মুর্শিদাবাদের দু’টি এবং মালদার দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট ছিল। তার মধ্যে সবথেকে বেশি ক্রিটিক্যাল বুথ ছিল মুর্শিদাবাদে। যার মধ্যে পড়ে ডোমকল বিধানসভা। অতীতে প্রায় প্রতিটি ভোটে ডোমকলে রক্তারক্তি এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও এবার নির্বিঘ্নে ভোট হয়েছে। ভোট শেষ হওয়ার পর বামপ্রার্থী মহম্মদ সেলিম এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দু’জনেই স্বীকার করে নিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে কোথাও বুথ দখল হয়নি। এটাকে নিজেদের সাফল্য বলেই মনে করছে কমিশন। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘বাকি দফাগুলিতে যত আর কোনও গন্ডগোল না হয়, তাহলে ‘ভালো রাজ্যের’ তালিকায় উঠে আসবে বাংলা।’

কমিশন সূত্রের খবর, শান্তিতে ভোট করানোর জন্য বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। অন্যদিকে তেলঙ্গানা-সহ একাধিক রাজ্যে ভোটে হিংসার অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বাংলায় ভোট করানোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি এবারই প্রথম প্রতিটি বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার জন্যই হিংসা থামানো গিয়েছে।’

কেউ কেউ অবশ্য মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার পর সিবিআই যেভাবে ধরপাকড় চালিয়েছিল, সেটা দেখে ভোট-দুষ্কৃতীরা ভয় পেয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে। কেউ কেউ জেলে রয়েছে। তাতেই সাফল্য এসেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version