বাড়ির পাশে কৃষ্ণনাম চলছিল। কিন্তু, নীল রঙা বাড়িটা নিঃস্তব্ধ। নীচের তলায় শাটার নামানো। দরজা জানালা বন্ধ। বাড়ির উপর পতপত করে উঠছে একটা পতাকা। কিন্তু, গত লোকসভাতেও চিত্রটা ছিল একেবারে আলাদা। ভোটের আগে থেকেই নেতাদের অহরহ যাতায়াত ছিল ‘কেষ্টদার দুয়ারে’। আপাতত তিনি তিহাড় সংশোধনাগারে রয়েছেন। গোরু পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। গ্রেফতার হন তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও। অনুব্রতকে ছাড়া নির্বাচনে এবারে বীরভূমের ভোটের ফলাফল ঠিক কী হয়, সেই দিকে সব নজর।এদিন সকাল থেকেই খাঁ খাঁ করছিল অনুব্রত মণ্ডলের নীচুপট্টির বাড়ি। প্রথমে দরজা বন্ধই ছিল। পরে তা খোলেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। তাঁরাই এই বাড়িটি প্রহরার দায়িত্বে রয়েছেন।

২০১৯ এবং ২০২১ সালের নির্বাচনে গৃহবন্দি থাকতে হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকেই। কিন্তু, অনুব্রতর অনুপস্থিতিতেও ‘চড়াম চড়াম’, ‘গুড় বাতাসা’ মতো কেষ্ট বাচন নিয়েই চর্চা চলছিল।

কিন্তু, ২০২২-এ তাঁর গ্রেফতারির পর বীরভূমে ‘কেষ্ট স্টাইল’-এই চালাতে হবে দল, এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। গড়া হয়েছে কোর কমিটিও। সেখানে কাজ শেখের বিয়োজন-সংযোজন পর্ব চলেছে। কিন্তু, অনুব্রতর শূন্যস্থান কি আদৌ পূরণ হয়েছে?

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘আসলে কেষ্টদা না থাকলে শুধু বীরভূম নয়, গোটা রাজ্যের নির্বাচনই কেমন যেন মিইয়ে যাচ্ছে। চোখা চোখা ডায়লগ কই! ভালো মন্দের বিচারে যাব না, তবে কেষ্টদার বুলি নিয়ে তো কম চর্চা হয়নি। আর দাদা থাকলে আজকের দিনটাই অন্য রকম হত।’

ভোটের দিন সাধারণত শিবের মাথায় জল ঢালার পর বাড়ি থেকে বার হতেন তিনি। এরপর তিনি পৌঁছে যেতেন নেতাজি রোডে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে। পার্টি অফিসে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনও করা হত। ভোট উৎসবের ছোঁয়া লাগত দলীয় কার্যালয়েও। কিন্তু, সেই সমস্ত কিছু এখন অতীত।

নির্বাচনে উধাও বীরভূমের সেই ‘চড়াম চড়াম’! লোকসভা ভোট তিহাড়েই কাটবে কেষ্টর

যদিও দলীয় নেতৃত্ব অনুব্রত মণ্ডলের উপর ভরসা প্রদর্শনে কোনও খামতি রাখেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনের আগে বীরভূম জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে করা বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, জেলায় যেভাবে দলকে সঞ্চালনা করতেন অনুব্রত মণ্ডল, সেই কায়দাতেই চালাতে হবে দল। কিছুদিন আগেই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, ‘মনে রাখবেন কেষ্ট রয়েছেন আমাদের মাথার উপর।’ একসময় প্রচারে অনুব্রতকে ‘বাঘ’ বলে সম্বোধন করেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version