এই সময়: ভোট প্রচারে নাম না-করে গেরুয়া শিবিরের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী অর্জুন সিং ও শান্তনু ঠাকুরকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের কিছু দিন পরে অর্জুন সিং জোড়াফুলে ফিরে এলেও ভাটপাড়ার এই নেতা নিজেকে বদলাননি বলে ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদকে বিঁধেছেন তৃণমূলনেত্রী। আর শান্তনুর নাম না-করে মমতার অভিযোগ, বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নাগরিকত্ব দেওয়ার নাম করে টাকাও তুলেছেন।চলতি লোকসভা নির্বাচনে জোড়াফুলের টিকিট না পেয়ে অর্জুন ফের বিজেপিতে ফিরে গিয়েছেন। পদ্মফুলের প্রতীকে ব্যারাকপুরেই লড়ছেন তিনি। সোমবার ব্যারাকপুরে নির্বাচনী প্রচারে তাঁর নাম না-করে মমতা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ছিল এক সময়ে, ভাবতাম হয়তো বদলেছে। কিন্তু বলি না আমরা, ময়লা যায় না ধুলে, কয়লাও যায় না। বলে বেড়াচ্ছে, তৃণমূল চোর। আমি বলি, ওরে হরিদাসরা কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন করছিস। টাকা কোথা থেকে আসছে।’

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে অর্জুন জয়ী হওয়ার পর ব্যারাকপুর লোকসভার বিভিন্ন অঞ্চল অশান্ত হয়েছিল। মমতা নিজেই সেই সময়ে ব্যারাকপুরের একাধিক এলাকায় গিয়েছিলেন। সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘সেই সময়ে কাঁচড়াপাড়া, নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল, হালিশহরে একা ঘুরে বেড়িয়েছি। এখানে একটার পর একটা পার্টি অফিস খুলেছি, রঙ করেছি। বলেছি, আয় দেখি ক্ষমতা থাকলে বন্দুক নিয়ে দাঁড়া। আমি বন্দুকের সামনে লড়তে পারি।’

Mamata Banerjee : ‘ইন্ডিয়া জোট সরকার গড়ছে’, লোকসভায় BJP-র কত আসন? ভবিষ্যদ্বাণী মমতার

ব্রিগেডে তৃণমূলের জনগর্জন সভায় অর্জুন মঞ্চে ছিলেন। সেই দিন তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হয়েছিল। প্রার্থী তালিকায় নাম না দেখে ব্রিগেড ছেড়ে বেরিয়ে যান অর্জুন। যদিও ভাটপাড়ার সিং পরিবারকে ‘ডেঞ্জারাস’ বলে মনে করছেন মমতা। ব্যারাকপুরের সভায় মমতা নোয়াপাড়ার কংগ্রেস নেতা বিকাশ বসুর খুনের ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ‘একজন স্বজন আছে, তিনি আবার জেলে বসে প্ল্যান করেন কী করে বাইরে মার্ডার করা যায়। এখন বাবু জেলে রয়েছে। ভাবছে, জেল থেকে বেরিয়ে প্ল্যান করব, কাউকে মার্ডার করবে। যেমন বিকাশকে করেছিল। ভয়ঙ্কর। ডেঞ্জারাস। ৪৪০ ভোল্ট। এঁদের ছুঁতে নেই। ছুঁলেও দোষ না ছুঁলেও দোষ।’

অর্জুন ছাড়াও মমতার তোপের মুখে পড়েছেন বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। উত্তর ২৪ পরগনার মতুয়া বলয়ে সিএএ নিয়ে প্রবল বিতর্ক চলছে। মমতা এ দিন শান্তনুকে নিশানা করে বলেন, ‘আপনাদের এখানে যিনি প্রার্থী হয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তিনি কোনও কাজ করেছেন? কিচ্ছু কাজ করেননি। শুধু ঘুরে বেড়িয়েছেন আর নাগরিকত্ব দেবো বলে কোথাও কোথাও টাকা তুলেছেন। খবর আমার আছে।’

তাঁর সংযোজন, ‘মোদী রবিবারও বলেছেন, সিএএ করবই। আমিও বলছি, গায়ের জোরে মতুয়াদের অধিকার কেড়ে নিতে দেবো না। আপনাদের গায়ে হাত দেওয়ার আগে আমার জিন্দা লাশের উপর দিয়ে মোদীকে পেরোতে হবে।’ বিজেপি নেতৃত্ব যেখানে সিএএ-র হয়ে এত সওয়াল করছে, সেখানে শান্তনু কেন নিজে আবেদন করেননি—এই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। তৃণমূলনেত্রীর কথায়, ‘বিজেপির যে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁকে বলুন প্রথমে আবেদন করতে। তুমি কেন আবেদন করছ না? নিজের বেলা আঁটিসুটি, পরের বেলায় দাঁত কপাটি! নিজে করবে না, আপনারা কেন করবেন?’ মমতার আক্রমণের মুখে অর্জুন ও শান্তনুর অবশ্য এদিন কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version