বাম দুর্গ হিসেবে পরিচিত হুগলিতে ২০০৯ সালে প্রথম সবুজ আবির ওড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। রাজ্যের পালাবদলের ইতিহাসে অন্যতম অধ্যায় সিঙ্গুর। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের রাজনৈতিক ইতিহাস বদলানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেছে নিয়েছিলেন রত্না দে নাগকে। বামেদের তরফে প্রতিপক্ষ ছিলেন রূপচাঁদ পাল। তাঁকে ৮১ হাজারের বেশি ভোটে কুপকাৎ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক।কিন্তু, ২০১৯ সালে হুগলির রাজনীতিতে আচমচাই ট্যুইস্ট। রত্না দে নাগকে হারিয়ে এই কেন্দ্রে জয়ী হন BJP প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এরপর অবশ্য বঙ্গ রাজনীতিতে একাধিক বদল এসেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমতো সবুজ আবির উড়েছে রাজ্যজুড়ে। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে একুশে কুপকাত হতে হয়েছিল BJP-কে।

হুগলি কেন্দ্রের জন্য এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক ‘দিদি নং ১’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলাদের কাছে তিনি বিপুল জনপ্রিয়। অভিনেত্রী হিসেবে সুনাম রয়েছে। টলিপাড়ার পরিচিত এই মুখকে তাঁরই প্রাক্তন সহশিল্পীর সম্মুখীন করে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে বাজিমাৎ করতে চাইছে তৃণমূল। অন্যদিকে, প্রাক্তন এবং বর্তমান অভিনেত্রীর লড়াইয়ের মাঝে হুগলিতে বামেদের বাজি মনোদীপ ঘোষ। তিনি গ্ল্যামার দুনিয়ার থেকে বহু দূরে। কিন্তু, রাজনীতির আঙিনায় তাঁর বসত দীর্ঘদিনের। শেষমেশ হুগলিতে ফলাফল কী হয় সেই দিকে সব নজর।

২০১৯ সালে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে BJP-র জয় অনেককেই অবাক করেছিল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি ছিল, এক্ষেত্রে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের তারকা খ্যাতি জয়ের নেপথ্যে অন্যতম ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছিল। কিন্তু, একুশের নির্বাচনেই খেলা ঘোরে। সিঙ্গুর, ধনেখালি, চুঁচুড়া, চন্দননগর, আদিসপ্তগ্রাম, বলাগড়, পাণ্ডুয়া-সমস্ত বিধানসভাগুলিই যায় তৃণমূলের দখলে।

লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ফের এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে BJP। কিন্তু, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি নন দলেরই একাংশ, হুগলির রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে এই কথাই।

হুগলিতে দিদি নং ১-এর শ্যুটিং! ভোটবাজারে তরজায় লকেট-রচনা

লকেট এবং রচনা-দুই জনেই দাপিয়ে প্রচার করছেন হুগলিতে। রাজনীতিতে নবীন হলেও লকেটের সঙ্গে সম্মুখ সমরের আগে সরাসরি প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করতে দেখা গিয়েছে রচনাকে। যদিও লকেট চট্টোপাধ্যায় সেখানে বলেছেন লড়াইটা মোদী বনাম মমতা। রাজনীতিতে নবীন রচনার প্রতিশ্রুতি, ভোটের পরও তিনি মানুষের পাশে থাকবেন ‘ঘরের মেয়ে’ হয়েই। গত পাঁচ বছরে সাংসদ থাকা সত্ত্বেও এলাকায় লকেটকে দেখা যায়নি বলে কটাক্ষ তৃণমূলের। তবে রচনার কিছু মন্তব্য নিনে চর্চা হলেও হাসিমুখে তা সামলেছেন তারকা প্রার্থী। সমস্ত ধরনের পাবলিসিটিকেই তিনি সাদরে গ্রহণ করছেন, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

হুগলিতে ‘দিদি নম্বর ১’-এর অডিশন? রচনার বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ লকেটের

এদিকে ভোট কাটাকাটির অংকে মনোদীপ যে অন্যতম ফ্যাক্টর হতে চলেছে, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version