জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন নির্মাণ শ্রমিক (রাজমিস্ত্রি)-এর ছেলে রাহুল শেখে। খবর ছড়াতেই এলাকায় তোলপাড় হতে শুরু করেছে। সজাল থেকে এলাকার গর্ব সোনার ছেলের বাড়িতে ভিড় জমতে শুরু করেছে।জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হতে চলেছেন জঙ্গিপুরের মঙ্গলজোন এলাকার রাহুল শেখ। বাবা রাজমিস্ত্রি। মা গৃহবধূ। অবসর পেলে বিড়ি বাঁধেন। পরিবারের আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে পড়াশোনার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে দেননি রাহুল। তাঁর সাফল্যে আনন্দের জোয়ার জঙ্গিপুরে। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তালিকায় ১২তম স্থানে নাম রয়েছে রাহুল শেখের। নিতান্তই দরিদ্র্য পরিবার থেকে উঠে এসে আহিরণের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশুনা করেন তিনি। রাহুল শেখের এই অসামান্য সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদবাসী।

জঙ্গিপুর মহকুমার বারালা রাম দাস সেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন রাহুল শেখ। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুর্শিদাবাদ শাখায় আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০১৮ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএএলএলবি পাশ করেন।এলএলএমের জন্য ভর্তি হন পঞ্জাব সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখাই থেকেই আইনে পিএইচডি করেন। জুডিডিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসে ১২ র‍্যাঙ্ক করেন।

রাহুল শেখ বলেন, ‘আমার বরাবর বিচার বিভাগের দিকেই লক্ষ্য ছিল। সেইমতো এগিয়ে গিয়েছি। সফল হয়েছি।’ পরিবার সূত্রে খবর, চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মা বাবার দ্বিতীয় সন্তান রাহুল শেখ। এক সময় টাকার অভাবে লেখাপড়া থমকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। সেই সময় মা বিড়ি বেঁধে ছেলের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছিলেন। বড় দাদা সাহিবুল শেখ রেল পুলিশে চাকরি পাওয়ার পরই সংসারে কিছুটা স্বাচ্ছল্য আসে। রাহুল শেখের পড়ার খরচ চালান তাঁর বড়দা।

চাকরি পাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন তিনি। দ্বাদশ শ্রেণি পাশের পর বোনের বিয়ে হয়েছে। এক ভাই স্নাতকের ছাত্র। ছোট ভাই দশম শ্রেণির ছাত্র। ভাইয়ের সাফল্যে গর্বিত দাদা সাহিবুল শেখ। সাহিবুল শেখ বলেন, ‘ভাই বরাবর লেখাপড়ায় অত্যন্ত ভালো। নিজের লক্ষ্য়ে স্থির থেকেছেন। এক সময় অভাবে আমাদের সংসারে দু’বেলা হাঁড়ি চড়ত না। আজ সুদিন এসেছে।’

এদিকে তাঁর সাফল্যে খুশির ছায়া প্রতিবেশী মহলেও। এলাকাবাসীর কথায়, রাহুলকে দেখে আরও অনেকেই জীবনে এগিয়ে যাবেন এবং পড়াশোনার জেদ তাঁদের মধ্যেও জাপটে ধরবে। এলাকার নতুন প্রজন্মের কাছে রাহুল উদাহারণ হয়ে থাকবে বলে মতামতা এলাকাবাসীর।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version