লোকাল ট্রেন, নিত্যযাত্রীদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। আর শুধু নিত্যযাত্রীরাই নন, প্রতিদিনই বহু অনিয়মিত যাত্রীও রেলে যাতায়াত করেন। হাওড়া, শিয়ালদা বা দক্ষিণ পূর্ব শাখা, সর্বত্রই চিত্রটা একইরকম। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় নিত্যযাত্রীরা কয়েকজন মিলে রীতিমতো দল বেঁধে যাতায়াত করেন। নিয়মিত একই ট্রেনের একই বগিতে তাঁদের যাতায়াত।নিত্যযাত্রীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের পাশাপাশি অনিয়মিত যাত্রীদের সঙ্গেও মিলেমিশে ট্রেনের আসন ভাগাভাগি করে যাতায়াত করেন। কোনও কোনও গ্রুপে তো নির্দিষ্ট স্টেশনের পর নিজেদের মধ্যে আসন পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে ভাগাভাগি করে যাতায়াত করতেও দেখা যায়। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার নিত্যযাত্রীদের বিরুদ্ধে আসন দখল করে রাখার অভিযোগও ওঠে। এমনকী সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অনিয়মিত যাত্রীকে বসতে না দিয়ে নিজেদের দলের সদস্যদের জন্য সিট দখল করে রাখার অভিযোগও ওঠে অনেক সময়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়ো

সম্প্রতি তেমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিয়োতে ট্রেনের সিট দখল নিয়ে এক তরুণী ও তাঁর মায়ের সঙ্গে অন্যান্য কিছু মহিলা যাত্রীর বিকবিতণ্ডা চলত দেখা যাচ্ছে। আর সেই বচসার ভিডিয়োই পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া। ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে ভাইরাল। ভিডিয়ো দেখে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াও দেন নেটিজেনরা। ভিডিয়োটি নজরে আসার পরেই পূর্ব রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এই সময় ডিজিটাল। এই ধরনের জায়গা দখল করার বিষয়ে বড় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিল রেল।

ভিডিয়োর ক্যাপশনে কী লেখা?

ভিডিয়োর ক্যাপশনে লেখা, ‘শান্তিপুর থেকে সকাল ৫:৫২ এএম-এর ট্রেনে, হবিবপুর থেকে আমি ও আমার মা ট্রেনের শেষ লেডিস বগিতে উঠি শিয়ালদা যাব বলে। অনেকটা রাস্তা, ২ ঘন্টারও বেশি, তাই সিট খুঁজি। কিন্তু বেশিরভাগ জায়গায় বহু মানুষ ব্যাগ দিয়ে সিট রেখে দিয়েছেন। এই রকমটা প্রতিদিনই করেন। সিট রাখা লোক কোথায় প্রশ্ন করায় বলেন, কেউ সামনে আছেন, কেউ পিছনে আছেন, নানান কথা। কিন্তু আসলে অন্যান্য স্টেশন থেকে তাঁদের বান্ধবীরা উঠবেন, তাঁদেরই জায়গা এঁরা রেখে দেন। যাইহোক আমরা পুরো লেডিস কামরা খুঁজে একটা জায়গা পাই। তারপর সেখানে আমি বসি এবং একটা সিটে ব্যাগ দিয়ে তিন নম্বরে জায়গা রাখা সেখানে মা-কে বসাই। আকাশী ও সাদা শাড়ি পরে গলায় তুলসীর মালা দেওয়া মহিলা ব্যাগ দিয়ে সিট রেখেই দেন। আমরা বলার পরও ওই মহিলা ব্যাগ সরাননি। বলেন ওঁর লোক উঠবে। তারপর কালীনারায়ণপুর যায়, রানাঘাট যায়, পায়রাডাঙা থেকে এই মহিলা ওঠেন আর আমার মা-কে সরিয়ে দিয়ে গায়ের জোরে বসে পড়েন। আসলে তিনজনের সিট, কিন্তু তবু চারজন আমরা সচরাচর সবাই বসি। কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে, যে আগে উঠবেন, তিনিই আগে যেই জায়গা পাবেন, সেখানে বসবেন। আমার মা তিন নম্বর সিটে বসে ছিলেন। আমার মা-এর গায়ের উপরে উঠে মা-কে সরিয়ে এই মহিলা জোর করে তিন নম্বর সিটে বসেন। তখন ভিডিয়োটা করতে পারিনি। তারপর ব্যাগ থেকে ফোন বের করে ভিডিয়োটা করি। দেখুন এটা কি ঠিক? যে আগে উঠবেন তিনিই তো আগে যেই জায়গা পাবেন, সেখানে বসবেন। এটা নিয়ে বলায় এদের কী জোর…..সবসময় এঁরা এই রকম করেন…. কেউ কখনও কোনও প্রতিবাদ করেন না। আর করলেও তাঁদের কেউ সাথ দেন না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করেন না বলেই এঁদের এত বাড়বাড়ন্ত।’

অভিযান চালানোর ইঙ্গিত রেলের

এই বিষয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘এটা আজকের সমস্যা নয়। তবে জায়গা দখল করে রাখা কখনওই ঠিক নয়। আমরা মাঝে মধ্যেই অভিযান চালাই, এগুলোকে আটকাই। অসংরক্ষিত আসনের দখলদারি নিয়ে মাঝেমধ্যেই আরপিএফ-এর অভিযান চালান হয়, আবারও হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version