এই সময়: জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো রেল সম্প্রসারণের জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করার দাবিতে দায়ের জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা পুরসভার রিপোর্ট না পেয়ে বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে গত সপ্তাহে রাজ্য সরকার, সেনা বাহিনী, কেন্দ্রীয় সরকার, রেল বিকাশ নিগম, বন দপ্তরের তরফে হলফনামা জমা পড়ে।এর আগের শুনানিতে এই সব প্রতিষ্ঠানের থেকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য তলব করেছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু সে দিন পুরসভা হলফনামা জমা না দেওয়ায় বিরক্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তারা ফের সময় চাইলে আদালত জানিয়ে দেয়, পুরসভার জন্য অপেক্ষা করবে না আদালত। কারণ, রাজ্য সরকার তাদের বক্তব্য ইতিমধ্যেই জানিয়েছে।

আদালতের বক্তব্য, আগামী মঙ্গলবার তারা এই মামলায় রায় দিতে চায়। মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা, মেট্রোর রেলপথ নির্মাণের জন্য ময়দান এলাকায় যথেচ্ছ গাছ কাটার অভিযোগে মামলা করে ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নির্বিবাদে গাছ কাটা হচ্ছে অভিযোগ তুলে ওই সংগঠনটি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। আরভিএনএল (রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড) এই কাজ করছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাকারী সংগঠনের বক্তব্য, মোট ৭০০ গাছ তারা কাটবে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২০০ গাছ কাটা হচ্ছে শুধুমাত্র মেশিন ও অন্যান্য জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার সুবিধার জন্য। প্রথমে এই কাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেও পরে ফের কাজ শুরুর অনুমতি দেয় আদালত। যদিও সব সংস্থার থেকে হলফনামায় হাইকোর্ট জানতে চায়, গাছ কাটার বিকল্প কীভাবে পূরণ করা হবে?

সেই ব্যাপারে সব সংস্থা নিজেদের বক্তব্য জানালেও পুরসভা কিছু জানায়নি। কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, তাঁরা যাবতীয় বক্তব্য জানিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন। জমা পড়া সব রিপোর্ট প্রধান বিচারপতি মামলাকারীকে দিয়ে তার পাল্টা যদি কোনও বক্তব্য থাকে, তা আগামী সোমবারের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেন। সেনার তরফে জানানো হয়, গাছ লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।

Calcutta High Court: সঙ্কট গভীর, চাপে বসেই যাচ্ছে হাইকোর্টের হেরিটেজ ভবন

যদিও এর আগে জলা বোজানোর অভিযোগে অন্য একটি মামলায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের স্পষ্ট অবস্থান ছিল, শহরের সবচেয়ে প্রাইম লোকেশনে জলা বেআইনি ভাবে বুজিয়ে তার বিকল্প বহুদূরে একটি ছোট জলা খুঁড়ে দিলেই সব দায় মুক্ত হওয়া যায় না। একইভাবে সব বড় গাছ কেটে ফেলে সেখানে চারা গাছ লাগালেই দোষ খণ্ডন হয় না। সব কিছুর মধ্যে একটা ব্যালান্স থাকা জরুরি বলে মনে করে হাইকোর্ট।

এই অবস্থায় ‘কলকাতার ফুসফুস’ নামে পরিচিত ময়দান থেকে যথেচ্ছ বড় গাছ কেটে ফেলে কত চারা গাছ লাগানো হলো, তা দেখা জরুরি বলে মনে করেন মামলাকারীদের আইনজীবীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version