এই সময়, বর্ধমান ও আসানসোল: দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পিছনের সারিতে চলে গিয়েছিল ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচার। যার জেরে অলক্ষে থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি, বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমানে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এই জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫২। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর, জেলা পরিষদ থেকে পুরসভাগুলো এবার ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচারকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। অন্য দিকে, পশ্চিম বর্ধমানে জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় ডেঙ্গি প্রতিরোধে চালানো হলো পরিচ্ছন্নতা অভিযান।পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক কর্তা থেকে চিকিৎসকদের আশঙ্কা, বর্ষার আগে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫২। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪২। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, ‘এখনই উদ্বেগ বা আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ভোটের ব্যস্ততায় নজরদারি বা সচেতনতার প্রচার একটু কম হয়েছে। তবে এবার আমরা পুরোমাত্রায় কাজ শুরু করেছি। সংখ্যাটা দ্রুত কমবে।’

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। জেলার ৬টি পুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩ জন। সেই তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ জন।

ডেঙ্গি দমনে পঞ্চায়েত, পুরসভাগুলো নিয়মিত ভাবে এলাকার জমা জল পরিষ্কার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পর্যবেক্ষণের যে কাজ করে এবার নির্বাচনের কারণে দু’মাসেরও বেশি তা বন্ধ। জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ার ক্ষেত্রে সেটাই কারণ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দপ্তর। শেষ সপ্তাহে পূর্ব বর্ধমানে ৭ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘জল নিকাশির পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাবেন পুরকর্মীরা।’ ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘ডেঙ্গির কারণে জেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। বর্ষার আগে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’

তৎপর হচ্ছে জেলা পরিষদও। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। পঞ্চায়েতগুলোকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।’

এদিকে গত বৃহস্পতিবার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরগুলোতে। আসানসোল জেলা হাসপাতাল, পশ্চিম বর্ধমান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তর, সালানপুরের পিঠাইকেয়ারি গ্রামীণ হাসপাতাল, পানাগড়, কেলেজোড়া, রানিগঞ্জ, খান্দড়া বাহাদুরপুর, অকালপুর সমেত প্রতিটি জায়গায় এই পরিছন্নতা অভিযান বিশেষ ভাবে পালিত হয়।

Dengue In Kolkata : কলকাতায় ‘হটস্পট’ ৬৪, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৯০ জন
এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনুস খান বলেন, ‘বর্ষার আগেই জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্ত কেন্দ্রগুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ পাঠিয়েছিলাম। গত বছর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। দু’হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবার আমরা সতর্ক রয়েছি।’ আসানসোল জেলা হাসপাতালে ডেপুটি সুপার কঙ্কণ রায় বলেন, ‘আমাদের জেলা হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চারটি ভ্যাট আছে। সমস্ত জায়গা ব্যাপক ভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version