২০১৯ সালের আগে তৃণমূল ছেড়ে নিশীথ প্রামাণিক যোগ দেন বিজেপিতে। সেই হাওয়ায় তিনি জিতে যান নির্বাচন। জেতার ফলও পান। ২০২১ সালে তিনি মন্ত্রীত্ব পান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন তিনি। অমিত শাহর ডেপুটি হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু, রাজ্য থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে গেলেও তিনি এবার জিততে পারলেন না।
কী কারণে হারতে হল তাঁকে?
কোচবিহারে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, অনেকরকম কথা। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভোটারদের ক্ষোভ। কী ক্ষোভ? অনেকেই বলছেন, সাংসদকে না পাওয়া। অভিযোগ, ২০১৯ সালে জেতার পর সেভাবে নিজের এলাকায় দেখা যায়নি নিশীথ প্রামাণিককে। প্রয়োজনে তাঁকে পাওয়া যেত না মানুষের পাশে। এতেই ক্ষুব্ধ হন সাধারণ মানুষরা। আর সেটার প্রভাব পড়ল ভোটবাক্সে।
এরসঙ্গে আরও একটা বিষয় হচ্ছে বিজেপির সংগঠন। অভিযোগ, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে থাকলেও সংগঠন ক্রমশ দুর্বল হয়েছে। তবে বিজেপি নেতাদের আত্মবিশ্বাসে খামতি ছিল না। এই সংগঠনের অভাবই তৃণমূলকে এগিয়ে দেয়। ভোটে জয় নিশ্চিত করে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘এই জয়ের সাফল্য কোচবিহারবাসীর। গুন্ডারাজ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন এখানকার মানুষ। এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে নিশীথ প্রামাণিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে ওদের ‘সোকলড হোম মিনিস্টারের’ কোমর ভেঙে দিয়েছে জনতা।’
তবে ঘাসফুলের উপর সাধারণ মানুষের ভরসা রাখার আরও একটি কারণ হচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো জনমুখী প্রকল্প। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পকে দু’হাত ভরে আর্শীবাদ করেছেন সাধারণ মানুষ। যেখানে নিশীথ প্রামাণিক কেন্দ্রের মন্ত্রী হলেও সেখানকার মানুষের জন্য কিছু করতে পারেননি বলে অভিযোগ। তবে সবার উপরে রয়েছে তৃণমূলের সংগঠন। পার্থপ্রতীম ঘোষ, উদয়ন গুহদের মতো নেতারা মিলে আরও শক্তিশালী করেছেন দলের সংগঠন। যেখানে বিজেপি কাজ করতে পারেনি সেখানে বাজিমাত করে দিয়েছে ঘাসফুল। রাজবংশী ভোটও এসেছে তৃণমূলের ঘরে। এতেই এল জয়। ২০১৯ সালে হাতছাড়া হওয়া আসন দখল করল তৃণমূল।