‘প্রশ্নঘুষ’ কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বহিষ্কার করা হয়েছিল মহুয়া মৈত্রকে। সংসদের অলিন্দে দাঁড়িয়ে ঝাঁঝিয়ে উঠেছিলেন। সেখানেই দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘শেষ দেখে ছাড়ব।’ ‘বোধন’ কবিতার কিছু লাইন উদ্ধৃত করে মহুয়া বলেছিলেন, ‘আদিম হিংস্র মানবিকতার যদি আমি কেউ হই/ স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের চিতা আমি তুলবোই।’ তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মোস্ট অ্যাক্টিভ’ সাংসদ মহুয়া মৈত্র জিতেই দেখালেন।লড়াইটা শুরু থেকে সহজ ছিল না। মঙ্গলবার গণনার শুরুর দিকে বেশ কিছু রাউন্ডে এগিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। তবে, বেলা যত গড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর ব্যবধান ততো বেড়েছে। দিনের শেষে এই কেন্দ্রে বাজিমাত করলেন মহুয়াই। বুঝিয়ে দিলেন, তিনি এখনও শেষ হয়ে যাননি। সংসদে দাঁড়িয়ে লড়াইটা এখনও অনেক বাকি।

বিজেপি এই কেন্দ্র থেকে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সদস্য অমৃতা রায়কে প্রার্থী করে। ‘রাজমাতা’কে নিয়েও অল্পবিস্তর খোঁচাও দিতে দেখা গিয়েছিল মহুয়াকে। তবে, বরাবরই তিনি বলে এসেছিলেন লড়াইটা তাঁর বিজেপির সঙ্গে। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে লড়াই। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব ব্যালটে দেওয়ার লড়াই। সর্বসাকুল্যে মর্যাদা রক্ষার লড়াই ছিল মহুয়ার। সেই লড়াই জিতেও দেখালেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনের শেষ পাওয়া আপডেট অনুযায়ী প্রায় ৫৭ হাজার লিড নিয়ে এই কেন্দ্র থেকে জিতলেন তিনি। গতবারও জয়ের ব্যবধান প্রায় কাছাকাছি ছিল। তবে, লড়াইটা বোধহয় এবার একটু কঠিন ছিল। একদিকে, সংসদ থেকে বিতাড়িত করে দেওয়ার মর্যাদা ফেরানো, অন্যদিকে, মোদী থেকে শাহের লাগাতার প্রচারকে ডিফেন্ড করা।

Mahua Moitra Krishnanagar Lok Sabha : ব্যবধান বাড়িয়ে ফুরফুরে মেজাজে মহুয়া মৈত্র

দলের পাশাপাশি, নিজের টিমকে নিয়ে লাগাতার পালটা প্রচার করে গিয়েছেন মহুয়া। একদিকে, কেন্দ্রের ‘স্বেচ্ছাচারী’ মনোভাবকে মানুষের সামনে তুলে ধরা, অন্যদিকে তৃণমূল সরকারের জনহিতকর কাজের খতিয়ান তুলে ধরা এবং সর্বোপরি নিজের সাংসদ এলাকায় তাঁর কাজের নিরীখে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন তিনি।

Mahua Moitra : বাড়ছে ব্যবধান, খোশ মেজাজে ‘সবুজ সাথী’ সাইকেলে সওয়ার মহুয়া
এই কেন্দ্র থেকে সিপিএম এস এম সাদিকে প্রার্থী করলেও লড়াইটা ছিল মূলত বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সদস্যকে প্রার্থী করে ‘সেন্টিমেন্ট’ কার্ড খেলতে চেয়েছিল বিজেপি। আদতে, তা কার্যকরী হয়নি। সাংসদ হিসেবে ‘বাগ্মী’ তো তিনি বটেই, সাংগঠনিক দক্ষতাও যে তাঁর রয়েছে, সেটাও আরেকবার প্রমাণ করে দিলেন মহুয়া। দিল্লির রাজনীতিতে আলোচনা হয়, কথার মারপ্যাঁচে লোকসভায় বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করতে পারেন পারেন যে কয়জন সাংসদ, সেই তালিকায় শীর্ষেই থাকেন মহুয়া। ফের একবার, দেশবাসী তাঁর ঝাঁঝালো বক্তৃতা শুনতে পাবে, এ কথা বলাইবাহুল্য।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version